*উজ্জ্বল ভট্টাচার্য্য,:-শিলিগুড়ি পাহাড়ের ছোট্ট কালোমাছির কামড়ে হতে পারে অন্ধত্ব। গবেষণায় গবেষকেরা জানতে পেরেছেন উত্তরবঙ্গের পাহাড়ের কালোমাছি র কামড়ে হতে পারে অন্ধত্ব। পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং ও কালিম্পং জেলার আটটি স্থানে এবিষয়ে গবেষণা চালিয়েছেন গবেষকেরা। ংজুওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার (জেড এস আই) – এর সুত্রে এবিষয়ে জানা গেছে, এই কালো মাছিগুলি সম্প্রতি জুওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার (জেড এস আই) ডিপ্তেরা বিভাগের বিজ্ঞানীদের গবেষণার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে এই কালো মাছিগুলি । দেখতে ছোট্ট এই কালো মাছি গুলির আঞ্চলিকভাবে “পিপসা” বা “পোটু” মাছি নামে পরিচিত। সম্প্রতি আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত গবেষণাপত্র “ভেক্টর- বর্ন অ্যান্ড জুনোটিক ডিজিজেস”-এ এই গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে।
জুওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার (জেড এস আই) এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) – এর সুত্রে জানা গেছে, এই কালো মাছিগুলি সম্প্রতি জুওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার (জেড এস আই) ডিপ্তেরা বিভাগের বিজ্ঞানীদের গবেষণার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে আঞ্চলিকভাবে “পিপসা” বা “পোটু” মাছি নামে পরিচিত, এই কালো মাছিগুলি । সম্প্রতি আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত গবেষণাপত্র “ভেক্টর- বর্ন অ্যান্ড জুনোটিক ডিজিজেস”-এ এই গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে।
আরও জানা গেছে – উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং এবং কালিম্পংয়ের মতো উত্তরবঙ্গের অনেক স্থানে পাহাড়ি নদীগুলি রক্তচোষা মাছির প্রজনন ঘটাতে সাহায্য করে যা মানুষের চোখের দৃষ্টি কেড়ে নিতে পারে । তবে এই কেন্দ্রীয় গবেষণা সংস্থার গবেষকরা আশ্বস্ত করেছেন, অতীতে এই মাছি থেকে এই অঞ্চলের মানুষের মধ্যে এখনো এই রোগ ছড়ায় নি।
এবিষয়ে আরও জানা গেছে ট্রাকোমা বিশ্বব্যাপী সংক্রমণ-সম্পর্কিত অন্ধত্বের প্রধান কারণ হিসাবে দেখা দিয়েছে, অনকোসারসিয়াসিস বা নদী অন্ধত্ব, আক্রান্ত ব্যক্তিবিশেষ- এর ক্ষেত্রেই প্রযোয্য । বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লু এইচ ও ) – র মতে, নদী অন্ধত্ব সবচেয়ে অবহেলিত গ্রীষ্মপ্রধান রোগগুলির একটি। এটি একটি নির্দিষ্ট ধরণের কীট, অনকোসেরসা ভলভলাস সংক্রমণের কারণে হয়ে থাকে। আঞ্চলিক ভাবে পরিচিত “ পিপসা” বা “পোটু” নামক এই কালো মাছিগুলি এই কীটের বাহক হিসেবে কাজ করে। এই মাছি যখন মানুষকে কামড়ায় তখন মাছি থেকে কীটটি মানবদেহে প্রবেশ করে। প্রথম ক্ষেত্রে , কীটগুলিগুলি ত্বকের নীচে নডুল বা ক্ষুদ্র স্ফিতীর আকার গঠন করে। তারা বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রক্ত প্রবাহের মধ্য দিয়ে চোখে প্রবেশ করে, শেষ পর্যন্ত যার পরিণাম হয় অন্ধত্ব। এই রোগ থেকে মানুষকে রক্ষা করার প্রথম পদক্ষেপটি হল সঠিকভাবে ভেক্টর বা মাছি – কালো মাছি শনাক্ত ও নিয়ন্ত্রণ করা। অতএব, উন্নত চিকিৎসার জন্য এই রোগের বাহকের আরও ভালভাবে চিহ্ণিতকরণের প্রয়োজন রয়েছে।
জুওলজিকাল সার্ভে অফ ইন্ভিয়ার (জেড এস আই) অধিকর্তা ডঃ ধৃতি ব্যানার্জী বলেন, “সিমুলিডে পরিবারের এই কালো মাছিগুলি অত্যন্ত ছোট। এদের খালি চোখে খুব কমই লক্ষ্য করা যায়। অনেক সময় কিছু বুঝে ওঠার আগেই মাছিগুলি রক্ত চুষে নেয়। এই মাছি পরিবারের অনেক প্রজাতি বাহ্যিকভাবে প্রায় অভিন্ন দেখায়। বৈজ্ঞানিক ভাষায়, বাহ্যিক বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে সিমুলিডে মাছির দুটি ভিন্ন প্রজাতির মধ্যে পার্থক্য করা বেশ কঠিন এবং সময়সাপেক্ষ।
ডঃ ধৃতি ব্যানার্জী আরও বলেন, দার্জিলিং হোক বা কালিম্পং, পর্যটন মানচিত্রে দুটি জায়গাই বাঙালিদের কাছে খুব প্রিয়, যা আর্থ-সামাজিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ করে তুলেছে। সারা বছরই এসব স্থানে প্রচুর মানুষ ঘুরতে আসেন । পর্যটকরা নিজেদের অজান্তেই আনন্দ করতে গিয়ে এই রক্তচোষা মাছির কামড় খেতে পারেন, যদিও ওখানকার স্থানীয়রা এই ক্ষেত্রে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। তবে , অন্ধত্বের ঝুঁকি উদ্বেগের বিষয় হিসাবে রয়েই যায়।
জুওলজিকাল সার্ভে অফ ইন্ভিয়ার (জেড এস আই) – এর ডিপ্টেরা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক ও বিজ্ঞানী ড. অতনু নস্কর জানান, পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং ও কালিম্পং জেলার আটটি স্থানে তাঁরা গবেষণা চালিয়েছেন। এই আটটি স্থান থেকে কালো মাছির নমুনা সংগ্রহ করা হয় এবং বাহ্যিক বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করে প্রাথমিক পৃথকীকরণের পরে, প্রজাতিগুলি চিহ্ণিত করতে ডিএনএ বারকোডিং পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।
জুওলজিকাল সার্ভে অফ ইন্ভিয়ার (জেড এস আই) – এর সিনিয়র রিসার্চ ফেলো এবং ব্ল্যাক ফ্লাই গবেষণার সঙ্গে জড়িত গবেষকদের একজন শ্রী অর্ক মুখার্জি ব্যাখ্যা করে বলেন, প্রথমে কালো মাছির নমুনার পা থেকে ডিএনএ সংগ্রহ করা হয় এবং তারপরে সেই ডিএনএ বারকোড করা হয়। প্রক্রিয়ার দ্বারা চারটি প্রজাতির কালো মাছিকে আলাদা করেছে- সিমুলিয়াম ডেন্টাটাম, সিমুলিয়াম ডিজিটাটাম, সিমুলিয়াম প্রেলারগাম এবং সিমুলিয়াম সেনাইল।
এবিষয়ে ভয় বা আতঙ্কিত না হয়ে যাতে এই মাছি কামড়াতে না পারে তার জন্য সজাগ এবং সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।
উত্তরবঙ্গের পাহাড়ের কালোমাছি র কামড়ে হতে পারে অন্ধত্ব…

Comment here