জেলাদেশরাজ্য

মুর্শিদাবাদ-ভাঙড়ে অশান্তির আবহে জনগনের উদ্দ‍্যেশে মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা.

প্রতিনিধি, মুক্তিযোদ্ধাঃ রাজ‍্যে ফের শান্তি ও সম্প্রীতির পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য জোরালো বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কালীঘাট স্কাইওয়াকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি স্পষ্ট বলেন, আইন কেউ নিজের হাতে তুলে নেবেন না এবং কোনও প্রকার প্ররোচনায় পা দেবেন না।
‘আমি অন্য কোনও প্রোগ্রামে গেলে আমার টাইটেল বদলে দেওয়া হয়।
কারা এটা করে? ধর্ম মানে শান্তি, স্বস্তি, সম্প্রীতি, একতা। মানুষকে ভালোবাসার থেকে বড় ধর্ম আর কিছু নেই।’ তিনি আরও প্রশ্ন তোলেন, ‘কীসের লড়াই, কীসের দাঙ্গা, কীসের অশান্তি? মানুষকে ভালোবাসলে সবকিছু জয় করা যায়। একা করে রাখলে জয় করা যায় না। আমরা সকলের পাশে দাঁড়াই।’
এরপরই মুখ্যমন্ত্রী শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের অধিকারের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করার অধিকার সবার আছে। তবে তা অনুমতি নিয়ে করতে হবে। সে যেই হোক, আইন হাতে নেবেন না। আইনের জন্য আইনের রক্ষক আছে। কেউ কেউ প্ররোচনা দেবে, প্ররোচিত হবেন না। সেটাই তো আসল। আপনারা জয়ী হোন। শান্তি বজায় রাখুন। এই মাটি শান্তির মাটি। এই মাটিকে ভালোবাসুন। আমরা যে কোনও ধর্মের পাশে দাঁড়াই।’
কালীঘাট স্কাইওয়াকের উদ্বোধন প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী এই প্রকল্পের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন। তিনি জানান, ‘৫০০ মিটার লম্বা ও ১০ মিটার চওড়া এই স্কাইওয়াকটিতে ৫টি গেট রয়েছে। এর মূল প্রবেশদ্বার দুটি হলেও, তিন দিক থেকে এখানে ওঠা যাবে।’
এছাড়াও, মুখ্যমন্ত্রী তারাপীঠে স্কাইওয়াক তৈরির পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেন। তবে, জায়গার অভাবের কারণে সেখানে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত করা সম্ভব হয়নি বলে তিনি জানান। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘গলিটা খুব সরু। কোনও জায়গা পাওয়া যায়নি। না হলে ওখানেও স্কাইওয়াক করে দিতাম।’
এদিনের বক্তব্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কালীঘাট স্কাইওয়াক প্রকল্পে রাজ্য সরকারের ভূমিকার কথা বিশেষভাবে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘এই প্রকল্পের ৯৯ শতাংশ অর্থ দিয়েছে রাজ্য সরকার। মন্দিরের চূড়ার একটি অংশ সোনা দিয়ে তৈরি হয়েছে। রিলায়েন্স তা করতে চেয়েছিল, আমি বাধা দিইনি। তবে বাকি পুরোটাই আমরা করেছি। অনেকের ধারণা ওরা পুরোটা করেছে, কিন্তু তা ঠিক নয়। ধর্ম কারও একার নয়, সবার।’
মুখ্যমন্ত্রীর এই বার্তা রাজ্যে সাম্প্রতিককালে ঘটে যাওয়া কিছু অস্থির পরিস্থিতি এবং বিভিন্ন মহলের উস্কানিমূলক মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। তিনি রাজ্যের শান্তি ও সম্প্রীতির ঐতিহ্য বজায় রাখার জন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।

Comment here