প্রতিনিধি, মুক্তিযোদ্ধাঃ- পশ্চিমবঙ্গের নাম পরিবর্তন নিয়ে এক গুরুত্বপূর্ণ দাবি উঠেছে রাজ্যসভায়। তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যসভায় দাবি তুলেছেন যে, পশ্চিমবঙ্গের নাম অবিলম্বে “বাংলা” করা হোক। তাঁর এই দাবিটি পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার সর্বসম্মত প্রস্তাবের ওপর ভিত্তি করে করা হয়েছে, যেখানে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে দাবি জানানো হয়েছিল রাজ্যের নাম পরিবর্তন করে “বাংলা” করা হোক।
ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “পশ্চিমবঙ্গের নাম পরিবর্তন নিয়ে বিধানসভায় সর্বসম্মত প্রস্তাব পাস হয়েছে কিন্তু এখনও পর্যন্ত কেন্দ্র সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। পশ্চিমবঙ্গের নাম পরিবর্তন শুধু একটি প্রশাসনিক পরিবর্তন নয়, এটি আমাদের ভাষা, সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো। বাংলা নামটি আমাদের সাংস্কৃতিক পরিচয়ের সঙ্গে যুক্ত, এবং এটি আমাদের ভাষা ও ইতিহাসের অংশ।”
আরও বলেন, “এই প্রস্তাবটি পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় সর্বসম্মতভাবে পাস হয়েছে। এটি শুধু রাজ্যের জনগণের জন্যই নয়, দেশের সমস্ত বাংলাভাষী জনগণের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হবে। রাজ্যের নাম পরিবর্তন বাংলাভাষীদের গর্বের বিষয়, এবং এটি বাংলার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে সম্মান জানাবে।”
ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় আরও উল্লেখ করেন, “রাজ্যের নাম পরিবর্তন হওয়া উচিত, কারণ এটা একটি দীর্ঘদিনের দাবি। রাজ্য সরকার এবং পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা ইতিমধ্যে এ বিষয়ে তাদের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছে, কিন্তু কেন্দ্র সরকার এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। আমরা আশা করি, কেন্দ্র সরকার দ্রুত এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেবে।”
এর আগে, ২০১১ সালে তৃণমূল কংগ্রেস সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই পশ্চিমবঙ্গের নাম পরিবর্তনের বিষয়টি আলোচনায় আসে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও বারবার বলেছেন, বাংলার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও ভাষাকে সম্মান জানিয়ে রাজ্যের নাম পরিবর্তন করা উচিত। তবে কেন্দ্রের তরফ থেকে এর কোনও বাস্তব পদক্ষেপ এখনো দেখা যায়নি।
এখন প্রশ্ন উঠছে, রাজ্যের নাম পরিবর্তনের জন্য কেন্দ্র সরকারের অনুমোদন কতটা সহজ হবে। রাজ্যসভায় ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই দাবি পুনরায় নাম পরিবর্তনের আন্দোলনকে সামনে আনতে পারে। এই নাম পরিবর্তন শুধু বাংলার জনগণের গর্বের বিষয় নয়, এটি দেশের অন্যান্য রাজ্যগুলোর জন্যও একটি বার্তা হতে পারে।
আসলে, রাজ্যের নাম পরিবর্তন কোনও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নয়, বরং এটি বাংলার গৌরব, ইতিহাস এবং সংস্কৃতির প্রতি সম্মান জানাতে একটি পদক্ষেপ। এখন দেখার বিষয় হল, কেন্দ্র সরকার এই দাবি মেনে নেবে কিনা বা বাংলার এই দীর্ঘদিনের দাবি পূর্ণ হবে কিনা।
Comment here