প্রতিনিধি:-
২০২৪-এর লোকসভার মহারণে মোদী বিরোধী মুখ কে? যত দিন যাচ্ছে এই লড়াই ক্রমেই জমে উঠছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলায় ২০২১-এ বিজেপিকে গোহারা হারিয়ে যে আওয়াজ তুলেছিলেন, হালে সেই মোদী বিরোধী মুখ হয়ে ওঠার বার্তা দিচ্ছেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল, কে চন্দ্রশেখর রাও-রা। বিজেপি বিরোধী জোটের প্রধান মুখের লড়াই ক্রমশ জমজমাট।মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথম থেকেই জাহির করে আসছেন বিজেপির বিরুদ্ধে প্রকৃত লড়াইটা তারাই দিতে পারেন। এই বার্তায় তিনি বারবার টার্গেট করছেন কংগ্রেসকে। কংগ্রেস বিজেপি-বিরোধী লড়াইটা লড়তে পারেনি বলেই বিজেপি আজ একচ্ছত্র আধিপত্য কায়েম করতে পেরেছে। বিজেপিকে ফাইট দিতে হলে, একমাত্র তারাই যোগ্য। তাঁদের নেতৃত্ব বিজেপি বিরোধী লড়াই চালানোই শ্রেয়।বিজেপি বিরোধী দলগুলিকে নিয়ে ইউনাইটেড ইন্ডিয়া গঠনের লড়াই শুরু করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর দল তৃণমূলের পক্ষ থেকে মমতাকে পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী প্রজেক্ট করতেও পিছপা হননি। এমনকী প্রধানমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হ্যাশট্যাগে প্রচারও শুরু করেছিল তৃণমূল। মমতাকে মোদী বিরোধী প্রধান মুখ হিসেবে তুলে ধরাই ছিল সেই প্রচারের উদ্দেশ্য। একইসঙ্গে তাঁরা বারবার বার্তা দিয়েছেন রাহুল নন, মমতাই শ্রেয় মোদী বিরোধী মুখ হিসেবে।এই লক্ষ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পাশে পেয়েছিলেন তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাওকে। তিনি নিজে মমতার পাশের দাঁড়িয়েছিলেন। পাশে পেয়েছিলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে। পেয়েছিলেন সমাজবাদী পার্টি সুপ্রিমো অখিলেশ যাদবকে। চেষ্টা করেছিলেন শিবসেনা ও এনসিপির সমর্থন আদায় করে নিতে। চেয়েছিলেন ডিএমকে, আরজেডি ও জেএমএমকেও পাশে পেতে।এখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল যখন দুর্নীতির ভারে রক্ষণ সামলাতে ব্যস্ত তখন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল বা তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও নিজেরাই মোদী বিরোধী প্রধান মুখ হয়ে ওঠার চেষ্টা করছে। সম্প্রতি অরিবিন্দ কেজরিওয়ালের দল আম আদমি পার্টি দিল্লিতে বিজেপির সরকার ভাঙার পরিকল্পনা রুখে দিয়ে জানিয়েছে, তারাই বিজেপি বিরোধী প্রধান শক্তিকে পরিণত হয়ে উঠেছে। তা বুঝতে পেরেই বিজেপি তাঁদের বিরুদ্ধে এককাট্টা হয়েছে। ২০২৪-এর নির্বাচনে আম আদমি পার্টিই হবে বিজেপির প্রধান চ্যালেঞ্জার।আর এখন কে চন্দ্রশেখর রাও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছত্রছায়া থেকে বেরিয়ে নিজেকে জাতীয় রাজনীতিতে মুখ্য ভূমিকায় তুলে ধরতে চাইছেন। বিজেপি বিরোধী লড়াইয়ে তৃতীয় ফ্রন্ট গড়ে তোলার বার্তা দিয়ে তিনি নিজের দলকে জাতীয়করণের লক্ষ্যে এগিয়ে দিয়েছেন। তেলেঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতি এবার ভারত রাষ্ট্র সমিতি হওয়ার দৌড়ে। এই কাজ যে তিনি ২০২৪-কে লক্ষ্য করেই করেছেন, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।অর্থাত্ মমতাকে নেত্রী করে এগিয়ে যাওয়ার পথ থেকে এখন অনেকটাই সরে গিয়েছেন কে চন্দ্রশেখর রাও ও অরবিন্দ কেজরিওয়ালরা। তাঁরা স্ব স্ব প্রধান হয়ে উঠতে চাইছে। তাঁরা চাইছেন কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে আঞ্চলিক দলগুলির জোট। কিন্তু সেখানে প্রধান ভূমিকা নেওয়ার লড়াই এখন মমতা, কেজরিওয়াল ও কেসিআরের মধ্যে। পরোক্ষে ডিএমকে, শিবসেনা, এনসিপি, আরজেডি এবং হালে জেডিইউ চাইছে কংগ্রেসের নেতৃত্বেই জোট হবে বিজেপি বিরোধী। তাহলে বিজেপির পতন নিশ্চিত। কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে কখনই বিজেপি বিরোধী লড়াই যথাযথ হবে না।