প্রতিনিধি:-
বাংলার বিজেপি অন্তর্দ্বন্দ্বে দীর্ণ, তবে সুনীল বনসল পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব নেওয়ার পরে অন্তর্দ্বন্দ্ব পিঠনে ঠেলে সরিয়ে দলকে রাজ্যে এগিয়ে নিয়ে যেতে সচেষ্ট। মূলত শাসক তৃণমূলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগকে সামনে রেখে নতুন করে প্রচেষ্টা শুরু করেছে বিজেপি। সুনীল বনসল জানিয়েছেন, তিনি মনে করছেন না রাজ্য বিজেপিতে তেমন বড় কোনও সমস্যা রয়েছে।পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির পর্যবেক্ষণ সুনীল বনসল সংবাদ মাধ্যমের প্রশ্নের উত্তরে জানিয়েছেন, তিনি মনে করেন না, রাজ্য বিজেপিতে তেমন বড় কোনও সমস্যা রয়েছে। তবে সমস্যা থাকলে তার সমাধান করা হবে। দুর্গা পুজোর পরে ২০২৩-এর পঞ্চায়েত নির্বাচন এবং ২০২৪-এর জন্য রোড ম্যাপ তৈরি করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
অন্যদিকে রাজ্য বিজেপির মুখপত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেছেন, ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের জন্য দলের পুনরুজ্জীবন কৌশল নিয়ে আসতে আশাবাদী তাঁরা। সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে সাক্ষাত্কারে তিনি স্বীকার করে নিয়েছেন, গত বিধানসভা নির্বাচনে পরাজয়ের পর থেকে দলের মধ্যে অশান্তি চলছে। তবে দল তা গ্রুত কাটিয়ে উঠবে বলেই মনে করেন তিনি। সঙ্গে তিনি বলেছেন, ভোট পরবর্তী হিংসাও দলের মনোবল হারানোর অন্যতম কারণ।রাজ্য প্রধান বিরোধী বিজেপি। কিন্তু তারা তৃণমূলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির একের পর এক অভিযোগ উঠার পরে সব থেকে খারাপ সময়ের মধ্যে দিয়ে গেলেও, তারা শাসকদলক কোণঠাসা করতে ব্যর্থ হয়েছে। দলের অন্যতম জাতীয় সম্পাদক অনুপম হাজরা বলেছেন, রাজ্য নেতৃত্বের উচিত পুরনো ও নতুন সবাইকে সঙ্গে নিয়ে চলা। দলের অভিজ্ঞ নেতাদের সাইডলাইন করে দেওয়ার অভিযোগ করে তিনি বলেছেন, এই কারণে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। এই পরিস্থিতির বদল আনতে হবে। তিনি বলেছেন, প্রথমে নিজেদের ঘর সাজাতে হবে, তারপরে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই। তবে বিজেপি তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ব্যর্থ হয়েছে, তা মানতে রাজি নন বর্তমান রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।গত বিধানসভা নির্বাচনে ২০০ আসন পেয়ে ক্ষমতায় না আসতে পারলেও (ভোটের সময় স্লোগান ছিল ইসবার ২০০ পার) ৭৭ আসন পেয়ে একমাত্র বিরোধীর মর্যাদা পায় বিজেপি। কিন্তু ভোটের ফল বেরনোর পরেই মুকুল রায় এবং পরবর্তী সময়ে বাবুল সুপ্রিয়, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় এবং এই বছরে অর্জুন সিং-এর মতো নেতারা তৃণমূলের ফিরে যাওয়া সংগঠনে প্রভাব পড়ে। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বও প্রকাশ্যে চলে আসে। রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো নেতারা নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েন। এছাড়াও উপ রাষ্ট্রপতি নির্বাচন তৃণমূল এড়িয়ে যাওয়ায় বাম-কংগ্রেস তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে বোঝাপড়ার যে অভিযোগ করেছিল, তাতেও দলের ভাবমূর্তিতে আঘাত করেছে বলেও মনে করছেন বিজেপির কেউ কেউ।তৃণমূলের মুখপত্র কুণাল ঘোষ বিজেপির বর্তমান অবস্থা নিয়ে কটাক্ষ করে বলেছেন, রাজ্যে আর খুব একটা কিছু করার নেই বিজেপির। যে কারণে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে ব্যবহার করছে তারা। অন্যদিকে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, রাজ্য বিজেপিতে তরুণ মুখের অভাবের কারণে বিজেপির অগ্রগতি থমকে গিয়েছে। কেউ কেউ বামেদের সঙ্গে বিজেপির তুলনা করে বলছেন, বামেরা আন্দোলনে এগোতে পারছে তরুণদের জন্য। এছাড়াও তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে বোঝাপড়ার প্রচারও রাজ্যে বিজেপির বিশ্বাসযোগ্যতার আঘাত করেছে বলেও মনে করেন কেউ কেউ। তবে বিজেপি এখনও ফুরিয়ে যায়নি। তারা লোকসভা নির্বাচনের আগে ফিরে আসার চেষ্টা করতে পারে বলেও মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ।