প্রতিনিধি :-
ক্ষমতায় আসার পর নরেন্দ্র মোদির আশ্বাস ভারতকে বিশ্ব গুরু-তে পরিণত করা অর্থাত্, আন্তর্জাতিক স্তরে ভারত অন্যান্য দেশকে পদ দেখাবে। মোদির ক্ষমতার আট বছর পার, রাজনৈতিক কারবারিদের মত, ক্রমশ সেই লক্ষ্যেই এগোচ্ছেন নরেন্দ্র মোদি।আন্তর্জাতিক স্তরে ভারতের অবস্থান ক্রমশ উন্নত হচ্ছে,বিশেষ করে আমেরিকা, রাশিয়া, চীনের সঙ্গে ভারসাম্য বজায় রেখে কূটনৈতিক পথকে প্রশস্ত করে চলেছেন মোদি। ২০২৩ সালে সেই পথ আরও চওড়া হওয়ার কথা, বিশেষ করে ভারতকে “বিশ্ব গুরু” হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা। চব্বিশের ভোটের আগে নরেন্দ্র মোদির জন্য যা বিশেষ জরুরি। ২০২৩ সালে বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক সফর ও সম্মেলনে অংশগ্রহণ করবেন নরেন্দ্র মোদি। মনে করা হচ্ছে, চব্বিশের ভোটের আগে ২০২৩ সালেই ভারতকে বিশ্ব-গুরু প্রমাণে তত্পর হবেন মোদি।
এই বিষয়ে নরেন্দ্র মোদির মূল মাধ্যম হতে চলেছে অস্ট্রেলিয়া। চীন-অস্ট্রেলিয়ান বাড়তি চাপানোতরের মাঝেই ভারত সফরে আসছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টোনি আলবেনিজ। তারপরেই অস্ট্রেলিয়া সফরে যাবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আগামী বছরে তাই অস্ট্রেলিয়া আন্তর্জাতিক সেতুতে পরিণত করে ভারত নজর কাড়তে চাইছে।
• নভেম্বর মাসে জি-20 সামিট
• তারপরেই ২০২৩ সালে SCO সামিট
• এই দুই সামিটে মোদির লক্ষ্য প্রোজেক্ট ‘বিশ্ব-গুরু’
• নভেম্বরে জি-20 সামিটের আগেই ভারত সফরে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী
• ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে অস্ট্রেলিয়া সফরে যাবেন নরেন্দ্র মোদি
• সেই সময়ই কোয়াড বৈঠকে বসবেন মোদি
এই সফর সূচির মধ্যেই অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে বেশ কয়েকটি গুরুত্বূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে ভারতের। ২০২৩ সালের সম্মেলনের আগেই ভারতকে ‘বিশ্ব গুরু’ প্রতিষ্ঠা করার সেতু তৈরি করে নিতে চাইছেন নরেন্দ্র মোদি। কারণ-
• অস্ট্রেলিয়ার লেবার পার্টির ভারতকে প্রয়োজন
• ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক বন্ধুত্ব স্থাপন করেই বিনিয়োগের পথ প্রশস্ত করতে চায় অজি সরকার
• ইতিমধ্যেই অস্ট্রেলিয়ায় অনেকবার গিয়ে বৈঠক করেছেন পিয়ূষ গোয়েল,প্রহ্লাদ যোশী,ধর্মেন্দ্র প্রধানের মতো নেতারা
• অজি প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের আগে এই বৈঠক করার নেপথ্যে রয়েছে বিশেষ রণনীতি
• অস্ট্রেলিয়ার তরুণ প্রজন্মকে কর্মসংস্থানে ভারতের বিনিয়োগ প্রয়োজন
• বিনিয়োগ ব্রেন-ড্রেনের মাধ্যমেও সম্ভব বলে মনে করা হচ্ছে
• যেখানে কোনওভাবেই চীনের মুখাপেক্ষি হতে চায় না অস্ট্রেলিয়া।
এই বিষয়টিকে সামনে রেখেই অস্ট্রেলিয়ার কাছে নিজেদের প্রস্তাব রাখতে চলেছে ভারত। সবকিছু ঠিক থাকলে ভারত সফরে এসে অজি প্রধানমন্ত্রী নতুন সংসদ ভবনে ভাষণ পর্যন্ত দিতে পারেন। যা ভারতের পক্ষে বড় কূটনৈতিক জয় হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
আট বছরের ক্ষমতায় মোদির বিদেশ নীত ফলপ্রসূ বলেই মনে করা হচ্ছে। সেখানে চীন নিয়ে ভারত-অস্ট্রেলিয়ার সমস্যা অনেকটাই এক। যেমন কলম্বোয় চীনের গুপ্তচর জাহাজ ঘিরে দুই দেশ ভারত-অস্ট্রেলিয়া অসন্তুষ্ট ছিল। অন্যদিকে, অস্ট্রেলিয়া মাটিতে ভারত বিরোধী খালিস্তানি আন্দোলন যাতে না বেড়ে ওঠে সেই বিষয়টি সামনে রাখতে পারেন নরেন্দ্র মোদি। সবমিলিয়ে, মোদির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বছর ২০২৩। যেখানে চব্বিশের ভোটকে পাখির চোখ করেই আন্তর্জাতিক খাতে এগোতে চাইছেন মোদি, সামনে রাখতে চাইছেন প্রোজেক্ট বিশ্ব গুরু।