প্রতিনিধি, মুক্তিযোদ্ধাঃ পশ্চিমবঙ্গের গোরুপাচার, কয়লাপাচার, চোরা চালান, মহিলাপাচার সহ একাধিক সীমানা সুরক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে সোমবার উত্তাল হল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক বিষয়ক সংসদীয় কমিটি। সূত্রের দাবি, সোমবার সংসদীয় কমিটির বৈঠকে প্রধান আলোচ্য বিষয় ছিল বিএসএফের কার্যপ্রণালী। সেখানে পশ্চিমবঙ্গের আন্তর্জাতিক সীমান্ত সুরক্ষায় বিএসএফের ভূমিকা নিয়ে যেমন প্রশ্ন ওঠে, তেমনই সরকারের নাকের ডগা দিয়ে কিভাবে দিনের পর দিন চলছে গোরুপাচার, মাদকদ্রব্য, অস্ত্র চোরা চালান, অনুপ্রবেশ তা নিয়েও অভিযোগ জানান সাংসদরা। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পক্ষ থেকে এই সমস্ত বিষয়ে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং সাংসদদের সকল প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে বলে সূত্রের দাবি। প্রসঙ্গত, এসএসসি দুর্নীতি মামলার পর এই মুহূর্তে কয়লা এবং গোরুপ্রচার মামলায় উত্তপ্ত রাজ্যের রাজনৈতিক পরিবেশ। গোরুপাচার মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন বীরভূমের দোর্দণ্ডপ্রতাপশালী তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল। অন্যদিকে, কয়লাপাচার মামলায় বারেবারে ডেকে পাঠানো হচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, তাঁর স্ত্রী রুজিরা এবং শ্যালিকাকে। এবার পশ্চিমবঙ্গের এই উত্তাপ ছড়িয়ে গেল সংসদেও। সোমবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক বিষয়ক স্থায়ী কমিটির বৈঠকে উঠে এল এই সকল প্রসঙ্গ।সূত্রের খবর, কমিটিতে বিজেপি এবং কংগ্রসের সাংসদরা প্রথম থেকেই গোরু এবং কয়লাপাচার নিয়ে মুখর ছিলেন। এই মুহূর্তে গোরুপাচার কাণ্ডে সিবিআই এবং কয়লাপাচার কাণ্ডে ইডির তদন্তে উঠে আসা বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেন তারা কমিটির সামনে। সূত্রের খবর, এই বিষয়ে কমিটিতে থাকা বাংলার দুই বিরোধী সাংসদ কংগ্রেসের অধীররঞ্জন চৌধুরী এবং বিজেপির দিলীপ ঘোষ দীর্ঘ বক্তব্য পেশ করেন। বিজেপির পক্ষ থেকে সীমান্তে যাবতীয় অপরাধমূলক কাজের জন্য রাজ্য সরকারকেই সরাসরি দায়ী করা হয়। সংসদ সূত্রে জানা যাচ্ছে, বিজেপির পক্ষ থেকে বলা হয় তৃণমূল নেতাদের প্রত্যক্ষ মদতেই দীর্ঘ সময় ধরে এহেন চোরাচালান এবং পাচারকার্য চলছে রাজ্যের আন্তর্জাতিক সীমানায়। এ বিষয়ে একাধিকবার রাজ্য সরকারকে কেন্দ্র এবং বিভিন্ন কেন্দ্রীয় সংস্থা গুলির পক্ষ থেকেও সতর্ক করা হলেও তাতে কান দেয়নি প্রশাসন। কেন্দ্রের যাবতীয় অনুরোধ এবং নির্দেশ উপেক্ষা করে রাজ্য সরকার যেমন পুরো সীমান্তে কাঁটাতার দেওয়ার ব্যাপারে উৎসাহ দেখায়নি তেমনই সীমান্তে অনুপ্রবেশ এবং যাবতীয় অপরাধ দমন করার জন্য কোনওরকম সক্রিয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।সংসদীয় সূত্রে আরও জানা যায়, তৃণমূলের পক্ষ থেকে সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন এরপর সীমান্ত সুরক্ষায় নিযুক্ত বিএসএফের তুমুল সমালোচনা করেন। কিভাবে বিএসএফ-এর চোখ এড়িয়ে দিনের পর দিন চোরাচালান এবং বিশেষ করে নারীপাচার চক্র চলেছে তাই নিয়েও সরব হন ডেরেক। তাঁর পক্ষ থেকে বলা হয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীনে বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স যদি তাদের কাজ সঠিকভাবে করত, তাহলে সীমান্তে চোরা চালান চিরতরে বন্ধ হয়ে যেত।