প্রতিনিধি:-
নিউটাউনের ইকোপার্কে প্রাতর্ভ্রমণে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি তথা সাংসদ দিলীপ ঘোষ। সেখানে তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিল্লি যাত্রা নিয়ে তীব্র কটাক্ষ করেছেন। পাশাপাশি তিনি বলেছেন তৃণমূলের ধমকানো, চমকানোর দিন শেষ।এদিন বলেন, বিজেপি সোনার বাংলার কল্পনা করেছিল। সোনার বাংলা বানাবো তৃণমূল সত্যিই সোনার বাংলা বানিয়ে দিয়েছে। বিজেপি বলত পশ্চিমবঙ্গ গরিব হয়ে গিয়েছে, বাংলার মানুষ গরিব হয়ে গিয়েছে ওইসব টাকার পাহাড় দেখলে কেউ বলবে না পশ্চিমবাংলার মানুষ গরিব কিংবা পশ্চিমবঙ্গ গরিব, বলেছেন দিলীপ ঘোষ।বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ তৃণমূলকে নিশানা করে বলেছেন, ওদের বলার দিন শেষ হয়ে গিয়েছে। ভয় দেখানো, চমকানোর দিন এখন শেষ। এখন মানুষ বলবে, ইডি বলবে, বাকিটা আদালত বলবে।
এদিন তিনি কটাক্ষ করে বলেছেন, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের চেহারা এখনও চকচক করছে। এতবার জেরা হওয়ার পরেও চেহারার মধ্যে কোনওরকমের দাগ পড়েনি। দিদিমণির সিদ্ধান্ত সঠিক, দলের সিদ্ধান্ত প্রভাব পড়বে। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে দিলীপ ঘোষ বলেন, দিদি সিদ্ধান্ত নিতে চাননি, তাই উনি সই করেননি। উনি ছিলেন না, পার্টির ভেতরে বিদ্রোহ শুরু হয়েছে। বাধ্য হয়ে তিনি (মমতা) মেনে নিয়েছেন। সাত দিন সময় লেগেছে সিদ্ধান্ত নিতে।
সেই জন্য পুরো পার্টিটা ডুবে যাচ্ছিল। পার্টিকে বাঁচানোর জন্য উনাকে (পার্থ) বাদ দেওয়া হয়েছে। তারা যতই বলুক আমরা কিছু জানি না, এত জায়গায় টাকার বান্ডিল পড়ে, নোট পড়ে আছে কেউ কিছু জানতো না, এটা হতে পারে না। তিনি মনে করেন, সবই আস্তে আস্তে বেরোবে।বিপদের দিনে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পাশ থেকে দল ও সরকার সরে গিয়েছে। এমনটাই মত বিরোধীদের। এব্যাপারে দিলীপ ঘোষ বলেন, দেওয়ালে এত লেখা আছে শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা মমতা ব্যানার্জি ভরসা। কী এমন হল মমতা ব্যানার্জি ফোনটাও তুললেন না, কীসের ভরসা? এরপর মমতা ব্যানার্জির ওপর কেউ ভরসা করবেন? প্রশ্ন করেছেন দিলীপ ঘোষ। তাঁর কটাক্ষে ভরা প্রশ্ন, এতদিন উনি (পার্থ) উনার (মমতা) ওপর ভরসা করেছিলেন। যখন দরকার হলো আর দিদিমণিকে পাশে পেলেন না।পার্থ চট্টোপাধ্যায় একটা সময় কুণাল ঘোষকে সরিয়েছিলেন। এবার কুণাল ঘোষ পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে সরালেন। এব্যাপারে দিলীপ ঘোষ বলেন, তাঁর মনে হয়, যে দিন আসছে, সত্যি সত্যি তদন্ত হয় মন্ত্রী-বিধায়ক-সংসদ, অনেককেই সরতে হবে ক্ষমতা বাঁচানোর জন্য। তাঁরা দৌড়াচ্ছেন এদিক-ওদিক, দিল্লি পর্যন্ত যাচ্ছেন। সাধারণ মানুষ অপরিসীম কষ্ট-দুঃখ-লজ্জা অপমানের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। সেখান থেকে মুক্তি চাই। আর মুক্তি এই সরকার যতদিন থাকবে হবে না। মানুষকে কিছু দিতে পারেননি অপমান আর গ্লানি দিয়েছেন। মানুষকে বাংলা ছাড়া করেছেন, এর যে পাপ তা ভুগতেই হবে, বলেছেন দিলীপ ঘোষ।আগামী সপ্তাহের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিল্লি যাচ্ছেন। এব্যাপারে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, তারা দেখেছেন, যখন উনি সংকটে পড়েন, তখনই দিল্লি যান। কত লোক উনার সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করেন। এইসব করে অনেকবার মূল বিষয় থেকে দৃষ্টি ঘোরানোর চেষ্টা করেছেন। রোজ উত্তর দিতে হচ্ছে, নিজের লোকেরা বিগড়ে যাচ্ছে এইসব দেখতে ভালো লাগে না। তাই একটু শান্তির জন্য দিল্লি যাচ্ছেন, বলেছেন দিলীপ ঘোষ।শুক্রবার বিকেলে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করেছেন এসএসসির চাকরি প্রার্থীদের একাংশ। এব্যাপারে দিলীপ ঘোষ বলেন, চাকরি প্রার্থী বহু। ধর্মতলার কাছে আলাদা আলাদা গ্রুপ বসে আছেন। গত ১০ থেকে ১১ বছর ধরে প্রত্যেকটিপরীক্ষা নিয়ে গণ্ডগোল হয়েছে। চাকরি পেয়েছেন যাঁরা টাকা দিয়ে পেয়েছেন। যারা যোগ্য তাঁরা চাকরি পায়নি, তাঁরা আন্দোলন করছেন। তাদের সঙ্গে কেউ কথাও বলেনি। নির্বাচনের পরে কথা বলবে বলেও কথা বলেননি। দিলীপ ঘোষ প্রশ্ন করেন, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কী অথরিটি রয়েছে
তা তিনি জানেন না। বিজেপি নেতা বলেছেন, যাঁরা বঞ্চিত তাদের টাকা কি ফেরত দিতে পারবেন, আর যাঁরা পরীক্ষায় পাস করে চাকরি পায়নি, তাদের সংস্যার কি সমাধান করতে পারবেন, যদি পারেন তো ভাল।