গত কয়েক মাসে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি (ED) আর সিবিআই (CBI)-এর সক্রিয়তা দেখেছেন দেশবাসী। এই সময়ের মধ্যে দেশের বিভিন্ন রাজ্যের নেতাদের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূলের নেতাদেরও ডেকে পাঠিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে এই দুই তদন্তকারী সংস্থা। সাম্প্রতিক সময়ে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটক দিল্লি গিয়ে ইডির জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হয়েছিলেন।গত ২৩ জুলাই তত্কালীন রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতিতে যুক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করে ইডি। একইদিনে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের দুটি ফ্ল্যাটে পরপর তল্লাশি চালিয়ে ৫০ কোটি টাকা নগদে উদ্ধার করে ইডি।
এছাড়াও প্রচুর সোনার গয়না, বিদেশি মুদ্রা, ভুয়ো কোম্পানি এবং অন্য সম্পত্তিরও হদিশ পায় ইডি। ইডির দাবি ২০১২ সাল থেকে অর্পিতার বিভিন্ন সম্পত্তিতে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাম রয়েছে। অন্যদিকে পার্থ চট্টোপাধ্যায় দাবি করেন অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হওয়া টাকা সম্পর্কে তিনি কিছু জানেন না। এরপরেই তৃণমূল পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে দল ও মন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে দেয়।গরু পাচার মামলায় এর আগে অনুব্রত মণ্ডলের দেহরক্ষী সায়গল হোসেনকে গ্রেফতার করে ইডি। এরপর অনুব্রত মণ্ডল ঘনিষ্ঠ বীরভূমের একাধিক ব্যবসায়ী ও নেতার বাড়িতেও তল্লাশি চালায় ইডি। এরপর ১১ অগাস্ট বৃহস্পতিবার অনুব্রত মণ্ডলকে তাঁর বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে ইডি।২০১১ ও ২০১৬- পরপর দুটি বিধানসভা নির্বাচনে নির্বাচনী হলফনামা দিয়েছিলেন তৃণমূলের নেতামন্ত্রীরা। কিন্তু বেশ কয়েকজনের আয় বহির্ভূত সম্পত্তি থাকার অভিযোগ করে হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়েছিল। সেই মামলায় সম্প্রতি ইডিকে যুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
তালিকায় ১৯ জন তৃণমূলের নেতা ও মন্ত্রীর নাম রয়েছে। তঁদের মধ্যে সুব্রত মুখোপাধ্যায় ও সাধন পাণ্ডে প্রয়াত হয়েছে। তালিকায় রয়েছেন ফিরহাদ হাকিম, ব্রাত্য বসু, মলয় ঘটক, বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্যের মন্ত্রী শিউলি সাহা, সব্যসাচী দত্তস গৌতম দেব, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়,
অমিত মিত্র, মদন মিত্র, অর্জুন সিং-এর মতা নেতারা।তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ইতিমধ্যেই কয়লা কেলেঙ্কারি মামলায় জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ইডি। এব্যাপারে তাঁর স্ত্রীকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ইডি।২০২১-এর তৃণমূল তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় আসার পরে তত্কালীন তিন বিধায়ক-সহ দুই মন্ত্রীকে নারদ মামলায় গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। সেই তালিকায় ছিলেন বর্তমান মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তত্কালীন অপর মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় প্রয়াত হয়েছেন। প্রসঙ্গত ২০১৬-র ভোটের আগে নারদা স্টিং অপারেশন প্রকাশ্যে আসে (এর সত্যতা যাচাই করেনি বেঙ্গলি ওয়ান ইন্ডিয়া)। সেখানে তত্কালীন তৃণমূলের নেতা, মন্ত্রী, সাংসদদের অনুগ্রহের বিনিময়ে টাকে নিতে দেখা গিয়েছিল।