প্রতিনিধি:-
বিজেপির রাজ্য সভাপতি পদ থেকে অপসারিত হয়ে সর্বভারতীয় সহ সভাপতি হয়েছিলেন দিলীপ ঘোষ। যে পদে ছিলেন মুকুল রায়, সেই পদে অধিষ্ঠিত হন দিলীপ ঘোষ কিন্তু মুকুল রায় ওই পদে থেকে কোনও বিশেষ দায়িত্ব পাননি বিজেপিতে থাকাকালীন, সেই ক্ষেত্রে ছাপিয়ে গেলেন মুকুল রায়কে। বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি হিসেবে তাঁকে আট রাজ্যের দায়িত্ব দেওয়া হল।মুকুল রায় সর্বভারতীয় সহ সভাপতি হিসেবে কোনও দায়িত্ব পাননি বিজেপিতে। শেষমেশ তিনি ফিরে যান তৃণমূলে কিন্তু দিলীপ ঘোষ সর্বভারতীয় সভাপতি হওয়ার এক বছরের মধ্যেই আট রাজ্যে বুথ সংগঠন শক্তিকরণের গুরুদয়িত্ব পেয়ে গেলেন। তাঁর এই প্রাপ্তিতে আবার প্রশ্ন উঠে পড়ল, এই দায়িত্ব অর্পণ তাঁর উত্থান নাকি বাংলা থেকে অপসারণ!রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছে, দিলীপ ঘোষকে বাংলা থেকে সরিয়ে দিতেই ভিন রাজ্যের দায়িত্ব দেওয়া হল। রাজ্যের বাইরে বড় দায়িত্ব দিয়ে সুকান্ত-শুভেন্দুর পথ পরিষ্কার করল কেন্দ্রীয় বিজেপি, যোগ্যতার নিরিখে বিজেপির আরও অনেক সহ সভাপতির মধ্যে থেকে এই দায়িত্বভার নিয়ে।
বঙ্গ বিজেপির একাংশ মনে করছে রাজ্য রাজনীতি থেকে তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হল। দূরত্ব বেড়ে গেল বাংলার রাজনীতির সঙ্গে। আটটি রাজ্যের দায়িত্ব দেওয়া হল বাংলার দিলীপ ঘোষকে, একপক্ষ এই দায়িত্ব প্রাপ্তিকে বাংলা থেকে অপসারণ বললেও প্রদেশ থেকে সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে দিলীপ ঘোষের কার্যভার নেওয়া সফল উত্থানের পরিচায়ক বলেই গণ্য হচ্ছে।
রাজ্য বিজেপির একাংশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, দিলীপ ঘোষকে আট রাজ্যের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে যোগ্যতার নিরিখে। বিজেপিতে অনেক সহ সভাপতি রয়েছে। তাঁদের মধ্যে থেকে দিলীপ ঘোষকে বেছে নেওয়া হয়েছে। তিনি যোগত্যার মাপকাঠিতে নতুন দায়িত্ব নিচ্ছেন। ২০২৪ নির্বাচনের প্রাক্কালে এক বৃহত্তর দায়িত্ব পেয়েছেন দিলীপ ঘোষ। দিলীপ অনুগামীদের দাবি, আট রাজ্যের দায়িত্ব দিলেও বাংলার সংগঠনেও তাঁর অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাবে বিজেপির।
দিলীপ ঘোষ নিজে জানান, আমি সংগঠনের লোক। আমার কাছে সবার আগে দল, তারপরে ব্যক্তি। কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব যে গুরুদায়িত্ব দিয়েছে, আমি তা পালন করার চেষ্টা করব। তা পালন করাই আমার কাজ। বাংলা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে যে কথা বলা হচ্ছে, তা ঠিক নয়। আমি বাংলা থেকে নির্বাচিত সাংসদ। আমার সংসদীয় ক্ষেত্রে বুথ সশক্তিকরণ কর্মসূচিতে আমাকেই করতে হবে। তাহলে আমাকে সরিয়ে দেওয়া হল বাংলা থেকে এ কথার অর্থ বোধগম্য হচ্ছে না।
তবে দিলীপ ঘোষকে আট রাজ্যে দায়িত্ব দেওয়ার পর স্পষ্ট হয়ে গেল বাংলায় শুভেন্দু অধিকারী ও সুকান্ত মজুমদারদের উপরই নির্ভর করতে চাইছে কেন্দ্রীয় বিজেপি। যতই সুকান্ত মজুমদারদের অনভিজ্ঞতা নিয়ে কথা হোক, তরুণ তুর্কি নেতাদের উপর ভর করেই ঘুরে দাঁড়াতে চায় বিজেপি। তাই দিলীপ ঘোষের অভিজ্ঞতাকে তাঁরা অন্য রাজ্যে কাজে লাগাতে চাইছে।