প্রতিনিধি,মুক্তিযোদ্ধাঃ শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে আরও বিস্ফোরক সব তথ্য সামনে আসছে। নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে টাকা ভর্তি খাম গিয়েছে শিক্ষাদপ্তরে। ইডির নজরে রয়েছেন বেশ কয়েকজন আধিকারিক। শিক্ষাদপ্তরের বেশ কিছু আধিকারিক এই দুর্নীতির নেটওয়ার্কে জড়িত বলে জেনেছেন তদন্তকারীরাবিনিময়ে প্রচুর আর্থিক সুবিধা পেয়েছেন তাঁরা। পার্থ ঘনিষ্ঠ অর্পিতার বাড়ি থেকে তাঁদের কাছে টাকা ভর্তি খাম গিয়েছে বলে জানতে পেরেছে ইডি। ফলে তদন্তেত গতি আরও বাড়াচ্ছে তদন্তকারীরা।
অর্পিতার বাড়িতে তল্লাশির সময় আটটি বড় খাম উদ্ধার করেন ইডির আধিকারিকরা। তাতে বিভিন্ন ব্যক্তির নামে নামে টাকা রাখা আছে। এর মধ্যে শিক্ষাদপ্তরের বেশ কয়েকজন আধিকারিকের নাম লেখা খাম রয়েছে। একেকটি খামে দশ লক্ষ টাকা ছিল।। এখান থেকেই সন্দেহের সূত্রপাত। পাশাপাশি, অর্পিতাকে জেরার সময় বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। ইডি দাবি করছে, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ ওই অভিনেত্রী জানিয়েছেন, তাঁর ফ্ল্যাটে বসেই টাকার ভাগ করে খামে ভরা হতো। তিনি নিজে এই টাকা বণ্টন করতেন। কাকে কত দিতে হবে, সেই অঙ্ক পার্থবাবু আগেই জানিয়ে দিতেন। সেইমতো প্যাকেট যেত বিভিন্ন জায়গায়। মন্ত্রীর নির্দেশেই বেশ কিছু চাকরিপ্রার্থীর কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন অর্পিতা। টাকা ভর্তি খাম পার্থর গাড়িতে করেই পাঠানো হতো। সেগুলি বহন করতেন মন্ত্রীর এক নিরাপত্তারক্ষী। শিক্ষাদপ্তর ও শিক্ষা সংসদের অফিসে বিভিন্ন আধিকারিকদের চেম্বারে সেসব পৌঁছে দেওয়া হতো। যাঁদের কাছে এই টাকা যেত, তাঁদের সকলের নামই হাতে পেয়েছেন তদন্তকারীরা।ইডি জেনেছে, এই আধিকারিকরা পার্থর পছন্দের লোক ছিলেন। ওই আধিকারিকরা জানতেন, পাশ করা চাকরিপ্রার্থীর নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। তার বদলে ঢোকানো হয়েছে তাঁদের নাম, যাঁরা টাকা দিয়েছেন। ঘুষের বিনিময়ে চাকরি পাওয়া প্রার্থীদের অ্যাডমিট কার্ড পৌঁছে দেওয়া হয়েছে মন্ত্রীর বাড়িতে। এমনকী ট্যাবুলেশন শিট ও নিয়োগপত্র মন্ত্রীর কাছে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন তাঁরা। সেগুলি পার্থবাবু যাচাই করে ফেরত পাঠাতেন আধিকারিকদের। এরপর সেই নিয়োগপত্র যেত এসএসসির অফিসে। দুর্নীতির নেটওয়ার্কে জড়িয়ে থেকে তাঁরা বিপুল পরিমাণ অর্থ রোজকার করেছেন। এই টাকায় তাঁরা বেনামে সম্পত্তি কিনেছেন বলে ইডি জেনেছে। সেগুলির হদিশ পাওয়ার চেষ্টা চলছে। ফলে তদন্তের গতি আরও বাড়াতে চলেছে ইডি।