প্রতিনিধি, মুক্তিযোদ্ধাঃ বাংলায় একুশের নির্বাচনের পর থেকে বিজেপি শুধু পিছিয়েই চলেছে। একের পর এক নির্বাচনে হার। আর তার উপর খাঁড়ার ঘা হয়েছে দলে ভাঙন। দলের তৃণমূলস্তর থেকে শীর্ষস্তর- সর্বত্রই ভাঙন দেখা দিচ্ছে। এই অবস্থায় তৃণমূলকে পাল্টা দিতে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনকেই টার্গেট করল বিজেপি। তৃণমূলকে ক্রস ভোটিংয়ে ভাঙনেপর স্বাদ দিতে তারা বদ্ধপরিকর।বিজেপির দাবি, তৃণমূলের অনেকেই তাঁদের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ যোগাযোগ রাখে। তাঁদের অনেকেই আসন্ন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ-র মনোনীত রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থীকে ভোট দেবে। তৃণমূলের পরিষদীয় দলে এই ইস্যুতে ভাঙন দেখা দেবেই। এমনকী তৃণমূলের অনেকর সাংসদও দ্রৌপদী মুর্মুকে ভোট দেবে বলে মনে করছেন শুভেন্দু অধিকারী, দিলীপ ঘোষরা।শুভেন্দু অধিকারী সম্প্রতি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, মহারাষ্ট্রের মতো বাংলাতেও সরকার ফেলতে বিজেপির দু-মিনিট সময়ে লাগবে। একটা অঙ্গুলিহেলনেই ছত্রখান হয়ে যাবে বাংলার তৃণমূল সরকার। ইডি-সিবিআই জুজু তো প্রায়ই দেখান বিজেপি নেতারা। এবার আপাতত রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে তৃণমূলকে ক্রস ভোটিংয়ের ভয় দেখাতে চাইছে।বিজেপির রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী দ্রৌপদী মুর্মু মঙ্গলবার বাংলায় এসেছিলেন। তিনি প্রথমে সিকিমের বিজেপি বিধায়ক-সাংসদদের সঙ্গে বৈঠক করেন শিলিগুড়িতে। তারপর কলকাতায় এসে বঙ্গ বিজেপির বিধায়ক-সাংসদদের সঙ্গে বৈঠক করেন দ্রৌপদী মুর্মু। তিনি তৃণমূলের বিধায়ক-সাংসদের সঙ্গে বৈঠক না করলেও জয় বাংলা স্লোগান তুলে আশাপ্রকাশ করে যান বাংলার ২৯৪ জন বিধায়কেরও সমর্থন পাবেন তিনি।আর বিজেপি নেতৃত্ব দ্রৌপদী মুর্মুর জয় বাংলা স্লোগানে বিড়ম্বনায় পড়লেও তারা এখন তৃণমূলের ভোট ভাঙিয়ে বার্তা দিতে চাইছে। তৃণমূলে দুই শতাধিক বিধায়ক থাকলেও তাদের সঙ্গে বিজেপি নেতৃত্বের প্রত্যক্ষ যোগাযোগ রয়েছে, তারা যে চাইলেই তৃণমূলে ভাঙন ধরাতে পারে, তা বুঝিয়ে দিতে চাইছে তৃণমূলকে। তৃণমূলকে জবাব দিতে তারা বেছে নিয়েছে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের মঞ্চকে।বিজেপি এক বছর ধরে ভাঙন যন্ত্রণা সহ্য করে রয়েছে। ইতিমধ্যে মুকুল রায়-সহ বিজেপির পাঁচজন বিধায়ক তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। বাবুল সুপ্রিয়-র মতো নেতা দল ছেড়েছেন। আবার ২১ জুলাইয়ের মঞ্চে কোন বেসুরো রাজ্যের শাসক দলে যোগ দেবেন তার নিশ্চয়তা নেই। এই অবস্থায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে তৃণমূলে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করতে চাইছেন বিজেপির নেতারা।