প্রতিনিধি,মুক্তিযোদ্ধাঃ- ব্যারাকপুরে বিরিয়ানির দোকানে দিনেদুপুরে গুলি চলা নিয়ে যখন উত্তপ্ত রাজ্য রাজনীতি তখনই প্রায় পনেরশো কিমি দূরে, রাজধানী দিল্লিতে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে রাজ্য বিজেপি সংগঠন, তার ফাঁকফোকর ও শীর্ষ নেতৃত্বের একাংশের অকর্মণ্যতার খতিয়ান তুলে ধরলেন ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং।পাটশিল্প ও শ্রমিকদের উন্নয়ন নিয়ে আন্দোলনে নেমেছেন অর্জুন। একইসাথে বাড়িয়ে নিয়েছেন দলের সঙ্গে দূরত্ব৷ পাটশিল্পে কেন্দ্রীয় ঔদাসিন্য নিয়ে স্বয়ং কেন্দ্রীয় বস্ত্রমন্ত্রী পীযুষ গোয়েলের বিরুদ্ধেও তোপ দাগতে ছাড়েননি তিনি। প্রকাশ্যে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছেন দলের বিরুদ্ধে। অর্জুন শিগগিরই দলত্যাগ করতে পারেন, শুরু হয় এমন জল্পনাও। এর পরেই তড়িঘড়ি অর্জুনকে দিল্লি ডেকে পাঠান গোয়েল। আশ্বাস দেন পাটশিল্প বলয়ে উন্নতিসাধন ত্বরান্বিত করার। এবার তাঁকে ডেকে পাঠালেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ জেপি নাড্ডা।
সোমবার দুপুরেই দিল্লি উড়ে আসেন অর্জুন। অথচ নাড্ডা তাঁকে সময় দেন রাত দশটায়। সেই মতো রাত ১০ টায় জেপি নাড্ডার দিল্লির বাসভবনে পৌঁছান অর্জুন। আধঘণ্টার বেশি সময় ধরে আলোচনা হয় দু’জনের। নাড্ডার সঙ্গে সাক্ষাৎ সেরে সাংবাদিক দের মুখোমুখি হয়ে অর্জুন সিং বলেন, ‘বৈঠকের কেন্দ্রবিন্দু ছিল পাট। পাট-শিল্পে উন্নয়ন আনতে সবরকমের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন নাড্ডা জি।’ অর্জুনের দাবি, নাড্ডা বলেছেন, এই পাটশিল্প নিয়ে অর্জুনের দাবিদাওয়া যথাযথ। তিনি নিজে এই বিষয়ে কর্মরত আধিকারিকদের সঙ্গে সমন্বয় সাধন করবেন ও যথাসম্ভব সাহায্য করবেন। পাট শিল্পকে পুনরুজ্জীবিত করতে সবরকম সাহায্যের হাত বাড়াবে দল ও সরকার।
স্বাভাবিকভাবে উঠে আসে সংগঠন নিয়ে প্রশ্ন। এই প্রেক্ষিতে অর্জুন জানিয়েছেন, ‘রাজ্য সংগঠন নিয়ে যা যা বলার ছিল তা জানিয়েছি। নাড্ডাজি সব ধৈর্য ধরে শুনেছেন। কেন দল সংগঠনে পিছিয়ে যাচ্ছে বা কেন বুথে লোক দেওয়া যাচ্ছে না, এসবই তাঁকে বলেছি।’ অর্জুনের দাবি, প্রদেশে নতুন সভাপতি আসার পর কোনও কমিটি গঠন হয়নি, বুথস্তরে সাধারণ মানুষের আস্থা হারাচ্ছে বিজেপি। তৃণমূল তরতর করে এগিয়ে যাচ্ছে, আর বিজেপি দলের মধ্যেই কোন্দলে জড়াচ্ছে। ব্যারাকপুর সাংসদ এর মতে, প্রচুর গাফিলতি হয়েছে। এসব নিয়ে যথেষ্টই ওয়াকিবহাল নাড্ডা’জি। উনি নিজেও স্বীকার করে নিয়েছেন, এমনটা হওয়ার কথা ছিল না। যা হচ্ছে, তা ঠিক হচ্ছে না৷ অর্জুন বলেন, জেপি নাড্ডা তাকে একটা ‘নোট’ বা লিখিত অভিযোগ জমা দিতে বলেছেন। খুব শিগগিরই তা জমাও দেবেন অর্জুন সিং। পরিশেষে ব্যারাকপুরে গুলিগোলার চলার ইস্যুতে তাঁর বক্তব্য, ‘ব্যারাকপুর মঙ্গল পাণ্ডের জায়গা, আর্মি ক্যাম্প আছে, মিশ্র সম্প্রদায়ের বহু মানুষ সেখানে থাকেন। পুলিশি ব্যবস্থা রাজ্যে একেবারেই ফেল করেছে, এর জন্য সম্পূর্ণ দায়ী তৃণমূল সরকার ও প্রশাসন।’