প্রতিনিধি, মুক্তিযোদ্ধাঃ- আসানসোল ও বালিগঞ্জ দুই কেন্দ্রের উপ-নির্বাচনে বিজেপির ভরাডুবি হয়েছে তা নিয়ে বঙ্গ বিজেপির কাছ থেকে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব রিপোর্ট তলব করল বিজেপির জাতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা।রাজ্য নেতৃত্বের কাছ থেকে রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছেন বলে বিজেপি সূত্রে এই খবর জানা গিয়েছে,ওই সূত্রের আরও দাবি, শুধু রিপোর্টই নয়, এই হারের জন্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তীকে দিল্লিতে তলব করা হয়েছে বুধবার । সূত্রের খবর, দুই কেন্দ্রের রিপোর্ট নিয়ে দিল্লি যাচ্ছেন অমিতাভ চক্রবর্তী । সূত্রের খবর, বিজেপির জাতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা রাজ্যের দায়িত্ব প্রাপ্ত পর্যবেক্ষক অমিত মালব্যের সঙ্গে ইতিমধ্যেই এই নিয়ে ফোনে কথা বলেছেন। বঙ্গ বিজেপির সভাপতি তথা বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদার বলেন, “দেখুন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব রিপোর্ট চেয়েছেন । আমরা দুই কেন্দ্রেরই রিপোর্ট দিল্লিতে জমা দেব । দুটো কেন্দ্রের হারের আমরা পর্যালোচনাও করব ৷”এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন, আসানসোলে ২০১৪ সাল থেকে ক্ষমতায় বিজেপি এবার তাদের সেই আসন হাতছাড়া হল ৷ সেখানে অগ্নিমিত্রা পাল ৩ লক্ষেরও বেশি ভোটে হেরেছেন ফলে এই নিয়ে দলের অন্দরে শোরগোল পড়েছে ৷ কারণ, বালিগঞ্জ আসনটিতে লড়াই কড়া কঠিন হবে বলে আগেই কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে রিপোর্ট দিয়েছিল বঙ্গ বিজেপি কিন্তু আসনসোল আসনটি বিজেপি জয়লাভ করবে বলেই রিপোর্ট পাঠানো হয় বলে ওই সূত্রের দাবি । তার বদলে এত বড় ব্যবধানে হার কেন, সেটা জানতে চান বিজেপির দিল্লির নেতারা ৷
তাছাড়া ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে এই আসনটিতে বিজেপি ২লক্ষ ভোটে জয়লাভ করেছিল । তাহলে মাত্র ২ বছরের মধ্যেই সংগঠনের হাল এত খারাপ কেন, সেটা স্পষ্ট করে জানাতে বলেছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ।বিজেপি সূত্রে খবর, আসানসোলে আদি বিজেপি কর্মীরা বসে যাওয়ায় এত খারাপ ফল হয়েছে বলে প্রাথমিক রিপোর্ট দিয়েছেন জেলা সভাপতি । মণ্ডল ও বুথস্তরের বিজেপি কর্মীরা কোনও কাজই করেননি এমনকী, অনেক বুথেই পোলিং এজেন্ট দিতেই পারেনি ।তবে বিজেপির ওই সূত্রের দাবি, আসানসোলে রাজ্য নেতৃত্ব অগ্নিমিত্রা পালকে প্রার্থী করলেও জেলা নেতৃত্ব তাঁকে চায়নি কিন্তু রাজ্য নেতৃত্ব তাঁদের এই প্রার্থীকে চাপিয়ে দেওয়া হয় । এই কেন্দ্রে জিতেন্দ্র তিওয়ারি, শমীক ভট্টাচার্য ও সায়ন্তন বসুর মতো পরিচিত কাউকেই আসানসোলে প্রার্থী করা হোক, সেটা জেলা নেতৃত্বের মূল দাবি ছিল কিন্তু রাজ্য নেতৃত্ব সেটা গুরুত্ব দেয়নি । যার ফলে নিচুতলার কর্মীরা বিজেপির হয়ে কোনও কাজই করেননি । যে জন্য এত বেশি মার্জিনে বিজেপি প্রার্থীকে পরাজিত হতে হয় ।অন্যদিকে, দুই উপ নির্বাচনে ভরাডুবির পরই রবিবার জেলায় জেলায় বিজেপির গণইস্তফা শুরু হয়েছে । মুর্শিদাবাদ, নদিয়া-সহ একাধিক জেলায় বিজেপির জেলা কমিটি ও মণ্ডল কমিটির নেতারা ইস্তফা দিয়েছেন । মুর্শিদাবাদের বিধায়ক গৌরীশঙ্কর ঘোষ বিজেপির সম্পাদক পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন । শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ জেলার পর্যবেক্ষকের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ লেফট করেছেন ।স্বাভাবিক ভাবেই তাই প্রশ্ন উঠছে, এই গণইস্তফার কারণ কী ? গেরুয়া শিবির সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় জেলায় মণ্ডল কমিটি তৈরি নিয়ে ক্ষোভ চরমে ৷ সেখানে জেলা সভাপতিদের পছন্দকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি ৷ বরং রাজ্য নেতৃত্ব ইচ্ছেমতো নেতাদের দায়িত্ব দিয়েছে ৷ সেই কারণেই গণইস্তফা শুরু হয়েছে বিজেপিতে আবার একনিষ্ট কর্মীকে কোনো পদে না বসিয়ে টাকার বিনিময়ে বেনোজল ঢুকিয়ে পদের সিংহাসন ভরাট করছে জেলার নেতা বর্গরা।