প্রতিনিধি, মুক্তিযোদ্ধাঃ-
মাত্র কয়েক মাস আগের ঘটনা,তৃণমূল কলকাতা পুরসভা নির্বাচনে বালিগঞ্জের দুটি ওয়ার্ড থেকে ৪০ হাজারের ব্যবধানে জিতেছিলেন কাউন্সিলরা। শনিবার বালিগঞ্জ উপনির্বাচনের ফলাফল প্রকাশ হতেই দেখা গেল সেই ভোটের ব্যবধান উধাও হয়ে গিয়েছে,উল্টে তৃণমূল কংগ্রেস দুটি ওয়ার্ডে পিছিয়ে পড়েছে নিকটতন প্রতিদ্বন্দ্বী সিপিএমের থেকে। সিপিএম এই ফিরে আসার লড়াইয়ে এই অঙ্ককেই অক্সিজেন করে এগোতে চাইছে।বালিগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত কলকাতা পুরসভার ৬৪ ও ৬৫ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল ব্যাপক লিড নিয়েছিল পুরভোটে। ৬৪ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল ১৮ হাজার ভোটে জয়ী হয়েছিল আর ৬৫ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল জিতেছিল ২২ হাজার ভোটে। এই বিপুল মার্জিন উপনির্বাচনের ফলে উধাও। বরং তৃণমূলের ঘাটতি হয়ে গিয়েছে ওই দুই ওয়ার্ডে।সিপিএম ৬৪ ও ৬৫ নম্বর ওয়ার্ডের ভোট সমীকরণকেই পাথেয় করছে ফিরে আসার লড়াইয়ে। কলকাতা পুরভোটের লড়াইয়ে ৬৪ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল পেয়েছিল ১৯০১৫টি ভোট আর নিকটতম প্রতিন্দ্বন্দ্বী সিপিআই প্রার্থী পেয়েছিলেন মাত্র ৬১৩টি ভোট,অর্থাৎ তৃণমূল প্রার্থীর জয়ের ব্যবধান ছিল ১৮৪০২। আবার ৬৫ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল পেয়েছিল ২৮৪২৮টি ভোট। বামফ্রন্টের আরএসপি পেয়েছিল ৫৭৫৮টি ভোট অর্থাৎ ব্যবধান ছিল ২২৬৩০।কিন্তু বালিগঞ্জ উপনির্বাচনের ফলে দেখা গেল দুটি ওয়ার্ডেই তৃণমূল পিছিয়ে পড়ল। ৪০ হাজারেরও বেশি ব্যবধান মুছে সিপিএম প্রার্থী সায়লা শাহ হালিম লি়ড নিলেন দুটি ওয়ার্ড থেকে। সংখ্যালঘু অধ্যুষিত দুটি ওয়ার্ডে সামান্য ভোটে হলেও লিড পেলেন সিপিএম প্রার্থী। এই ‘জয়’কে সিপিএম ঘুরে দাঁড়ানোর রসদ বলে মনে করছে।বালিগঞ্জ বিধানসভার ৬৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের ওয়ার্ডে ৩৫৬ ভোটে লিড পান সিপিএম প্রার্থী সায়রা শাহ হালিম। তিনি ভোট পেয়েছেন ১১৩২৪টি আর তৃণমূলের বাবুল সুপ্রিয় ভোট পেয়েছেন ১০৯৫৫টি। কংগ্রেস ও বিজেপি ভোট পেয়েছে যথাক্রমে ১০৭৪ ও ৩৫০৬। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেববাবুর এলাকায় দীর্ঘদিন পর লিড পেল সিপিএম।শুধু বুদ্ধদেববাবুর ৬৫ নম্বর ওয়ার্ডেই নয়, সিপিএম এগিয়ে রয়েছে তার পাশের ওয়ার্ড ৬৪ নম্বর ওয়ার্ডেও। ৬৪ নম্বর ওয়ার্ড থেকে সিপিএম প্রার্থীর প্রাপ্ত ভোট ৫৭৮২। সেখানে তৃণমূল প্রার্থীর প্রাপ্ত ভোট ৫৫৮০। কংগ্রেস ও বিজেপি উভয়েই ৫৯১টি করে ভোট পেয়েছে। ২০২টি ভোটে লিড সিপিএমের। সিপিএমের এই ওয়ার্ড দুটিতে তৃণমূলকে টেক্কা দেওয়া নিয়েই রাজনৈতিক পর্যালোচনা শুরু হয়েছে তারপর থেকে।সিপিএমের ব্যাখ্যা, তৃণমূল যে ভোট লুঠ করে এই লিড পেয়েছিল তা প্রমাণ হয়ে গিয়েছে উপনির্বাচনের ফলাফলে। সুজন চক্রবর্তী বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও জানেন না, তাঁর দলের আসল গণভিত্তি কী! কলকাতা পুরসভার ৬৪ ও ৬৫ নম্বর ওয়ার্ড দেখিয়ে দিয়েছে রাজ্যের আসল চিত্র। আর এই রাজনৈতিক সমীকরণ থেকেই রাজ্য রাজনীতিতে অক্সিজেন খুঁজছে চলেছে সিপিএম।