প্রতিনিধি:-
নিজের চোখে দেখেছে একের পর এখ বাড়িতে হামলা চালানো হচ্ছে, আগুন দেওয়া হচ্ছে। সেই কথা ভুলতে পারছে না রামপুরহাটের বগটুই গ্রামের গণহত্যার ঘটনার অন্যতম প্রত্যক্ষদর্শী নাবালক কিয়ান শেখ। নিজেও একাধিক হামলাকারীকে চিহ্নিত করেছে। নিজের কাকিমা নাজেমা শেখকে হারিয়ে সে ফাঁসি চায় অভিযুক্তদের। আপাতত পুলিশের প্রহরায় রয়েছে কিয়ান শেখের পরিবার।পরিবারের অন্যদের সঙ্গে ২১ মার্চে নাবালক কিয়ান শেখ সেদিনও হামলার শিকার হয়। দমকল বাহিনী তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করেছিল। শরীরের ডান দিক, বিশেষ করে ডান হাত পুড়েছিল গণহত্যার আগুনে। দিন দুয়েক আগে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরে ফের একবার পরীক্ষার জন্য এসেছিল রামপুরহাট সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। সেখানেই কাকিমা নাজেমা বিবির মৃত্যু সংবাদ পায়। আপাতত পুলিশি প্রহরায় রয়েছে এই পরিবার।পরিবারের অন্যদের মতো সেও পালানোর চেষ্টা করেছিল। কিয়ান জানিয়েছে, সোমবার রাতে কাকিমা নাজেমা বিবি-সহ একই ঘরে অন্যরাও ছিলেন। সংখ্যায় সাত-আটজনের মতো। হঠাৎই বাড়ি লক্ষ্য করে একের পর এর বোমা উড়ে আসতে থাকে। তারপরে ভাঙচুর, আগুন লাগানোর মতো ঘটনা। সেই সময়ই তাঁর ডান দিকে আগুনে পুড়ে যায়। কিয়ান জানিয়েছে কাকিমা নাজেমা বিবিকে নিয়ে বাড়িতে নয় জনের মৃত্যু হয়েছে। যাঁরা মারা গিয়েছে, তাঁরা কিয়ানের সঙ্গে সম্পর্কে নতুন মা, ছোট মা, চাচাতো বোন, চাবি, দাদি। কিয়ান জানিয়েছে, গ্রামের উপপ্রধান ভাদু শেখের মারা যাওয়ার পরেই তাদের বাড়ি সহ পরপর বাড়িতে হামলা চালানো হয়। আগুন লাগানো হয়। তবে হামলাকারীদের চিনতে পেরেছিল সে। তার দাবি অনুযায়ী, সেদিনের হামলাকারীদের মধ্যে শেখ মফিজুল এবং শেখ রস্তানও ছিল এছাড়াও আরও অনেকে। তবে আত্মীয়দের মারা যাওয়ার খবর সে পেয়েছে হাসপাতালে বেডে শুয়েই।রামপুরহাটের বগটুই গ্রামের গণহত্যার ঘটনার সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। কিন্তু যে ঘটনার পরে এই গণহত্যা, সেই ভাদু শেখের হত্যার তদন্তও সিবিআই যাতে করে, তার জন্য আদালতে আবেদন করেছে কংগ্রেস। কংগ্রেস নেতা তথা আইনজীবী কৌস্তভ বাহচির করা আবেদনের প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার এই মামলার শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে। স্থানীয়দের একাংশ বলছেন, যদি ভাদু শেখের হত্যার তদন্ত সিবিআই করে, তাহলে অনেকের নামই সামনে আসতে পারে।