মুক্তিযোদ্ধাঃ-
সুর কিছুটা হলেও নরম করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । এর আগে, সরাসরি কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে বিজেপি বিরোধী জোট গড়ার কথা বললেও, ৫ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর, শুক্রবার তিনি কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করার স্পষ্ট ইঙ্গিত দিলেন। মমতা বলেছেন, ‘যদি কংগ্রেস চায়’ তবে তাদের সঙ্গে জোট করতে পারে তৃণমূল কংগ্রেস । কারণ, বিজেপিকে পরাজিত করতে হলে সব দলেরই একসঙ্গে চলা উচিত।
২০২২ সালের ৪ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির জয়-জয়কারের পর, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁর বিজয় ভাষণে বলেছেন, এই বিপুল জয় ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের সুর বেঁধে দিয়েছে। তবে, মমতা এদিন বলেন, এই চার রাজ্যে জয়ে, বিজেপির বড় ক্ষতি হবে। এরপরই তিনি বলেন, বিজেপির বিরুদ্ধে যারা লড়তে চায়, তাদের সকলের ২০২৪ সালের নির্বাচনে একসঙ্গে পথ চলা উচিত। তিনি বলেন, ‘কংগ্রেস চাইলে আমরা সবাই একসঙ্গে লড়াই করতে পারি’। তবে একই সঙ্গে তিনি এই কথাও বলেছেন যে, ‘কংগ্রেস বিশ্বাসযোগ্যতা হারাচ্ছে। তাদের উপর নির্ভর করা যায় না’।গত ডিসেম্বর তৃণমূল সুপ্রিমোর এক মন্তব্যে হইচই পড়ে গিয়েছিল কংগ্রেস শিবিরে। মহারাষ্ট্র সফরে গিয়ে, তিনি বলেছিলেন, ‘ইউনাইটেড প্রোগ্রেসিভ অ্যালায়েন্স (ইউপিএ) বলে আর কিছু নেই’। সেখানেই শেষ নয়, তৃণমূলের মুখপত্র ‘জাগো বাংলা’-র সম্পাদকীয়তেও লেখা হয়েছিল, ‘কংগ্রেস ব্যর্থ… ইউপিএ শেষ হয়ে গিয়েছে…কংগ্রেস নিজেদের ফ্রিজারে ঢুকিয়ে রেখেছে’ন। যার সমালোচনা কংগ্রেস নেতাদের পক্ষ থেকে তো বটেই, শিবসেনার মতো দলের নেতারাও করেছিলেন।
তবে, ২০২২-এ পাঁচ রাজ্যের মধ্যে চারটি রাজ্যে বিজেপির জয়ের পর, সুর পাল্টে গিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্বের। বৃহস্পতিবারই, কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেছিলেন, ‘তৃণমূল দেখিয়েছে কীভাবে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করতে হয় এবং তাদের হারাতে হয়।
এখন কংগ্রেসের উচিত, তৃণমূলের সঙ্গে মিশে গিয়ে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে লড়াই করা।’ পরদিনই কংগ্রেসের সঙ্গে জোট গড়ার বড় বার্তা দিলেন মমতা।
৪ রাজ্যে বিজেপি জয় পাওয়ার পাশাপাশি পঞ্জাবে ক্ষমতা দখল করেছে আম আদমি পার্টি । জাতীয় রাজনীতিতে বিজেপি বিরোধী দলের জায়গায় কংগ্রেসের জায়গা নিতে যারা তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় রয়েছে। পঞ্জাব জয়ের পর এই দৌড়ে কেজরিওয়াল অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছেন বলেও মনে করা হচ্ছে। তবে ভারতের ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দলগুলির নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগে এগিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কংগ্রেস নিয়ে তাঁর সুর বদলের পিছনে, আপ-এর উত্থানও বড় কারণ হতে পারে।