প্রতিনিধি মুক্তিযোদ্ধাঃ-
একুশের নির্বাচনে তৃণমূলের বিপুল জয়ের পিছনে প্রশান্ত কিশোর ও তাঁর সংস্থা আই প্যাকের অবদান ছিল অনস্বীকার্য কিন্তু পুরভোটের প্রাক্কালে প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে দূরত্ব বেড়ে যায় তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আন-ফলো পর্যন্ত করে দেয় আই প্যাক। কিন্তু মঙ্গলবারের সাংগঠনিক বৈঠক দেখাল পিকে-মমতার বরফ গলছে।মমতা ও পিকের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়েছিল মূলত এক ব্যক্তি এক পদ নিয়ে। প্রশান্ত কিশোর পরিকল্পনা করেছিলেন তৃণমূলে ‘এক ব্যক্তি এক পদ’ নীতি আরোপ করতে। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন তাঁর বিরোধী তিনি প্রশান্ত কিশোরের সেই পরিকল্পনায় কাঁচি চালিয়ে দিয়েছিলেন।পরবর্তী সময়ে এই ‘এক ব্যক্তি এক পদ’ নীতিতে তৃণমূলের অন্দরে ফাটল স্পষ্ট হয়ে ওঠে। পিসি-ভাইপোর দ্বৈরথ চলছে বলেও রাজনৈতিক মহলের একটা অংশ মনে করে। তারপর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের প্রভাব খাটিয়ে স্পষ্ট করে দেন তৃণমূলে তিনিই শেষ কথা। অভিষকপন্থী ও মমতাপন্থীর মধ্যে লড়াই ক্রমে জোরদার হয়ে উঠলেও তা শক্ত হাতে রাশ টেনে ধরেন তৃণমূল সুপ্রিমো স্বয়ং নিজে, অভিযোগ উঠেছিল প্রশান্ত কিশোরের আই প্যাক তৃণমূল নেতাদের সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেল ব্যবহার করে প্রচার চালাচ্ছে এক ব্যক্তি এক পদ নীতিতে। চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য দাবি করেন, তাঁর অনুমতি না নিয়েই তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলে এক ব্যক্তি এক পদ নীতির সমর্থনে ব্যানার পোস্ট করা হয় তা নিয়ে চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের সঙ্গে প্রশান্ত কিশোরের আই প্যাকের এক প্রস্থ বাদানুবাদও হয়।এই অবস্থায় তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে প্রশান্ত কিশোরের সম্পর্ক তলানিতে নেমে যায় বলে রাজনৈতিক মহলে চর্চা শুরু হয় কিন্তু প্রশান্ত কিশোর এক সাক্ষাৎকারে স্পষ্ট করে দেন, আমার সঙ্গে দিদির সম্পর্ক নিয়ে নানা গল্পকথা লেখা হচ্ছে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে।
দেখে বেশ মজা লাগছে। সংবাদমাধ্যমেরও তো কিছু রসদ দরকার ওরা ওদের কাজ করছে।পিকে সাফ জানিয়ে দেন, আমার সঙ্গে তৃণমূল সুপ্রিমোর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেমন সম্পর্ক ছিল, তেমনটাই রয়েছে। দিদি আর আমার মধ্যে কোনও সমস্যা নেই। আবার অনেক ক্ষেত্রে বলা হয়েছে দিদি আর অভিষেকের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়েছে, তারপর আবার এমন কথাও বলা হয়েছে যে, অভিষেকের আর আমার সঙ্গে দিদির দ্বন্দ্ব প্রশান্ত কিশোর বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূলের সুপ্রিমো। তিনি তাঁর মতো করে সংগঠন সাজাচ্ছেন। একজন ভোট কৌশলী হিসেবে আমার কী করণীয় তা আমি জানি। তাঁর টিম বাংলা তথা ভিনরাজ্যেও কাজ করে চলেছে। তৃণমূলকে একটা নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছে দেওয়াই তাদের উদ্দেশ্য। এদিন প্রশান্ত কিশোরকে তৃণমূলের সাংগঠনিক বৈঠকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় দেখা গেল। মমতা-অভিষেকের সঙ্গে পিকের এই ছবিতে স্পষ্ট বরফ গলে গিয়েছে কি না আদৌ কিছুই ঘটেনি।