মালদা:-
মা ক্যাসসার রোগে আক্রান্ত হয়ে পাঁচ মাস আগেই চিকিৎসার অভাবে তিলে তিলে মারা গেছে, বাবাও সংসার ত্যাগ করে নতুন সংসার পেতেছে। শুধু ছেড়ে যায়নি অসুস্থ একমাত্র ভাই আর পড়াশোনা করার অদম্য জেদ।একটি মাত্র জরাজীর্ণ কাঁচা ঘরে পলিথিন টাঙিয়ে উপরওয়ালার ভরসায় দিন কাটছে কার্যত অনাথ এক ভাই- বোনের। ভালোবেসে পাড়া-প্রতিবেশীরা মাঝেমধ্যে গরম ভাত তরকারি যায় বটে কিন্তু মাসের অধিকাংশ দিনই কাটে হিঞ্চে সেদ্ধ ও কচুশাক খেয়েই।
আজ পর্যন্ত মেলেনি সরকারি কোন রকম সাহায্য তবে হ্যাঁ ভোট আস্তেই বার কয়েক ঘুরে গেছে এলাকারর রাজনৈতিক নেতা নেতৃরা।সবকিছু দাঁতে দাঁত চেপে সহ্য করেও এখনো পর্যন্ত পড়া ছাড়নি মালদার তুলশিহাটা বিদ্যালয়ের ছাত্রী দুলি খাতুন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেল মালদার হরিশ্চন্দ্রপুর-১ নং ব্লকের মহেন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত বাংরুয়া নয়াটলা এলাকার বাসিন্দা দুলি খাতুন(১৫)। পাঁচ মাস আগে মা রবিনা খাতুন ক্যানসার আক্রান্ত হয়ে প্রায় বিনা চিকিৎসায় মারা গেছে। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় রবিনা খাতুনকে ফেলে স্বামী বাড়ি ছেড়ে নতুন সংসার পেতেবসে।
বাবা মা কে হারিয়ে সেই দিন থেকেই শুরু হয় দুলির লড়াই। তুলসীহাটা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্রী সে। দুলি বলে গ্রামের কয়েকটা কয়েকজনের বাড়িতেকাজ করে তাদের ভাই-বোনের কোন রকমে চলে যায় তবে যেদিন কাজে যেতে পারে না সেদিন কচুশাক হিঞ্চে শাক খেয়েই কাটাতে হয়। তবে দুলির আক্ষেপ “এখন স্কুল বন্ধ আছে বাড়ি বাড়ি কাজ করে তবু কিছু টাকা হাতে আসে স্কুল খুলে গেলে সেটাও বোধহয় আর হবেনা।”
দুলী খাতুনের প্রতিবেশী নুরজাহান বিবি বলেন, “ওরা দুই ভাই বোন। ছেলেটা মাঠাঘাটে কাজ করে। মেয়েটা কোনো রকমে এখানে ওখানে চেয়ে চিন্তে দিন মজুরির কাজ করে দিন চালায়। বাড়ি ঘর বলতে প্লাস্টিকের একটা ত্রীপল।
২০১৭ সালের বন্যায় টেনে নিয়ে গিয়েছিল মাথাগোঁজার একমাত্র বাড়িটা তারপরে অনেক কষ্টে কোনরকমে একটা চাল খাড়া করে ত্রিপল দিয়ে ঘিরে আস্তানা করতে পেরেছে। দুটি স্বপ্ন দেখে বড় হয়ে পড়াশোনা করে চাকরি করবে।লড়াই সে কোনভাবেই ছাড়বেনা সমাজে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করবেই। আর নিজের সবটুকু দিয়ে চেষ্টা করবে তার মত আর কারো ভাগ্য যেন এমন না হয়।