প্রতিনিধি, মুক্তিযোদ্ধাঃ ওয়াকফ আইন প্রত্যাহারের দাবিতে অশান্ত বাংলা। মুর্শিদাবাদ সহ বাংলার দিকে দিকে অশান্তি। সুতি, সামশেরগঞ্জের হিংসার বলি ৩। আহত হয়েছেন আরও অনেকে। মুর্শিদাবাদ এবং অন্যান্য এলাকায় অশান্তি পাকানোর দায়ে গ্রেপ্তার দেড়শোর কাছাকাছি। মুর্শিদাবাদে অশান্তির পরিপ্রেক্ষিতে, কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ হাইকোর্টের।
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর দায়ের করা পিটিশনের প্রেক্ষিপ্তে শনিবার সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। এরপরই আদালতের রায়কে স্বাগত জানিয়ে শুভেন্দু বলেন, “বাংলা জুড়ে দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়া অশান্তির প্রেক্ষিতে, আমি অশান্ত এলাকায় কেন্দ্রীয় আধাসামরিক বাহিনী মোতায়ের বিষয়ে রাজ্য সরকারের জরুরি হস্তক্ষেপের জন্য অনুরোধ করেছিলাম। রাজ্য তা গ্রহণ করে নি। অন্য কোনও বিকল্প না পেয়ে, আমি আজ জনস্বার্থ মামলার জরুরি শুনানির জন্য কলকাতা হাইকোর্টের মাননীয় প্রধান বিচারপতির কাছে আবেদন করেছিলাম। আমার আবেদন মঞ্জুর করা হয়। মাননীয় বিচারপতি সৌমেন সেন এবং মাননীয় বিচারপতি রাজা বসু চৌধুরীর মাননীয় ডিভিশন বেঞ্চ বাংলায় স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য আমার দায়ের করা জনস্বার্থ মামলার শুনানিতে রাজ্যের তীব্র বিরোধিতা সত্ত্বেও, জীবন বাঁচানোর জন্য মাননীয় আদালত মুর্শিদাবাদে সিএপিএফ মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছে। আমি আদালতের এই আদেশকে স্বাগত জানাই”।
শনিবার রাতে মুর্শিদাবাদের হিংসা কবলিত এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশকে স্বাগত জানিয়েছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। রাজভবন থেকে প্রকাশিত এক ভিডিও বার্তায় রাজ্যপাল বলেন, “মুর্শিদাবাদ সহ বাংলার হিংসা-কবলিত এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের হাকোর্টের নির্দেশ সম্পর্কে আমি ইতিমধ্যেই অবগত। আমি খুশি যে কলকাতা হাইকোর্ট এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেছে এবং উপযুক্ত সময়ে যথাযথ সিদ্ধান্ত দিয়েছে।”
কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশের পরই মুর্শিদাবাদে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের অনুমোদন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব গোবিন্দ মোহন জানিয়েছেন যে মুর্শিদাবাদে প্রায় ৩০০ সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্য ছাড়াও, রাজ্য সরকারের অনুরোধে অতিরিক্ত ৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে পুলিশমন্ত্রী, বিএসএকে ডাকতে হবে কেন? প্রশ্ন তুলে ফের বিতর্ক উস্কে দিলেন ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবির। পাশাপাশি তিনি বলেন, “পুলিশ ব্যর্থ হয়েছে। প্রথম দিন থেকেই তারা যদি কঠোর হত, দোষীদের চিহ্নিত করে শাস্তি দিলে পরিস্থিতি হাতের বাইরে যেত না”।
অশান্ত মুর্শিদাবাদে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন খোদ তৃণমূল বিধায়ক। ফরাক্কার তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক মনিরুল ইসলামের বাড়িতে ভাঙচুর, লুটপাট। ভাঙচুরের পর অগ্নিসংযোগের চেষ্টা করা হয় বলে মারাত্মক অভিযোগ। তড়িঘড়ি থানায় ছুটে আসেন বিধায়ক। ঘটনায় পুলিশের উপর ক্ষোভ উগরে বলেন, পরিবার আতঙ্কিত। আমার বাড়ি ভাংচুর করা হল। পুলিশ নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ তা বলতে আমি পিছপা হব না”।
বিজেপি নেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায় রাজ্যে অশান্তির প্রেক্ষিপ্তে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করে বলেছেন, “ওয়াকফ বিলের নামে পশ্চিমবঙ্গে হিংসা ছড়ানো হচ্ছে। ওয়াকফ বিলের লক্ষ্য কোনও মুসলিম সম্প্রদায়ের ক্ষতি করা নয়, বরং এটি নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার তা সমর্থন করছে, সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করা হচ্ছে। হিন্দুদের ঘরবাড়ি লুট করা হচ্ছে। পরিস্থিতি বাংলাদেশের মতো হয়ে গেছে।”
মুর্শিদাবাদের ঘটনায় নিজের দলের বিধায়কের নিশানায় মমতার পুলিশপ্রশাসন…

Comment here