প্রতিনিধি,(মুক্তিযোদ্ধা)ঃ প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সিবিআই একটি গুরুত্বপূর্ণ নথি উদ্ধার করেছে, যেখানে রাজ্যের প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতাদের নাম রয়েছে। এই তালিকায় রয়েছে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর ভাই তথা তমলুকের প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী এবং বিজেপি নেত্রী ভারতী ঘোষের নাম।
এছাড়াও রয়েছে তৃণমূল বিধায়ক শওকত মোল্লা এবং তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ মমতাবালা ঠাকুরের নামও। তারা সকলেই নাকি পছন্দের প্রার্থীদের নামের তালিকা পাঠিয়েছিলেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কাছে
গত বছর জুন মাসে সিবিআই বিকাশ ভবনের ওয়্যারহাউসে অভিযান চালিয়েছিল, এবং সেখান থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ নথি উদ্ধার করা হয়। এই নথিতে ৩২৪ জন চাকরিপ্রার্থীর নাম রয়েছে, যাদের সুপারিশ করেছিলেন কিছু গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক নেতারা।
সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, এই নথির মধ্যে দেখা যায়, দিব্যেন্দু অধিকারী এবং ভারতী ঘোষের নামের পাশে তাঁদের পরিচিতি অনুযায়ী পদ উল্লেখ করা হয়েছে। দিব্যেন্দুর নামের পাশে এমপি (সাংসদ) লেখা, কারণ তিনি এক সময়ে তমলুকের তৃণমূল সাংসদ ছিলেন। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পরে তিনি বিজেপিতে যোগ দেন। ভারতী ঘোষের নামের পাশে এসপি (পুলিশ সুপার) লেখা, কারণ তিনি পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রামের পুলিশ সুপার ছিলেন এবং পরবর্তীতে বিজেপিতে যোগ দেন। এই খবর জানাজানি হতেই রাজ্য রাজনীতিতে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। বিরোধী দলনেতা দিব্যেন্দু অধিকারী এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে রাজি হননি। তাঁর কথায়, ‘আগে চার্জশিট পড়ে দেখি তার পর বলব।’ আর এক বিজেপি নেত্রী ভারতী ঘোষ জানিয়েছেন তিনি কাউকে চাকরি দেওয়ার সুপারিশ করেননি। বেশ কয়েকজন পরীক্ষার্থীর পরীক্ষাকেন্দ্র বদলের কথা বলেছিলেন।
তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই সূত্রের খবর, ২০টি করে চাকরির জন্য সুপারিশ করেছিলেন দিব্যেন্দু এবং মমতাবালা। আর চারটি নাম সুপারিশ করেছিলেন প্রাক্তন আইপিএস ভারতী ঘোষ। এ ছাড়া বিধায়ক হিসাবে নাম রয়েছে নির্মল ঘোষ, বীণা মণ্ডল, শওকত মোল্লা, শ্যামল সাঁতরা, রমেন্দ্রনাথ বিশ্বাস, গুলশন মল্লিকের। নথিতে দেখা যাচ্ছে, ‘রিসিভড অ্যাট অফিস’ বলে উল্লেখ করে তার নীচে কয়েক জন চাকরিপ্রার্থীর নাম রয়েছে। তদন্তকারীরা মনে করছেন, কিছু নাম সরাসরি কোনও একটি অফিসে সুপারিশ করা হয়েছিল। বোঝার সুবিধার জন্যই ‘রিসিভড অ্যাট অফিস’ লিখে রাখা হয়েছিল নথিতে।
যদিও এ ব্যাপারে চক্রান্তের অভিযোগ তুলেছে মমতাবালা ঠাকুর এবং ভারতী ঘোষ। একটি সংবাদমাধ্যমকে ভারতী ঘোষ বলেন, “কারও চাকরির সুপারিশ করিনি। শুধু একজনের ক্ষেত্রে পরীক্ষা কেন্দ্র বদলের অনুরোধ করেছিলাম। এজন্য দুর্নীতির সঙ্গে নাম জড়ালে আইনি পথে মোকাবিলা করব।” মমতাবালার বক্তব্য, “পুরোটাই চক্রান্ত।” তবে এ ব্যাপারে যা বলার তা আদালত বা কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকেই জানাবেন বলে জানিয়েছেন দিব্যেন্দু।
প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতিতে এবার নাম শুভেন্দুর ভাই দিব্যেন্দু অধিকারী ও ভারতী ঘোষের

Comment here