প্রতিনিধি, মুক্তিযোদ্ধা: এসএসকেএম থেকে উলুবেড়িয়া সম্প্রতি একাধিক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শ্লীলতাহানির অভিযোগ সামনে আসতে অস্বস্তি বেড়েছে রাজ্যের। বড়সড় প্রশ্নের মুখে পড়েছে রাজ্যের সরকারি হাসপাতালের নিরাপত্তা। এই আবহে সরকারি হাসপাতালগুলির নিরাপত্তা ও সুরক্ষা ব্যবস্থা দৃঢ় করতে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে নবান্নে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
সেখানেই কয়েকদফা নির্দেশিকা জারি নবান্নের।
হাসপাতালের নিরাপত্তা নিয়ে কড়া মমতা:-
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে নবান্নে জরুরি বৈঠকের ডাক দিয়েছিলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। সূত্রের খবর, এদিন ফোনের মাধ্যমে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠকে প্রচন্ড উদ্বেগ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। একাধিক কঠোর নির্দেশ দেন তিনি।
এদিনের উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে সব সরকারি হাসপাতালের প্রিন্সিপাল, সুপাররদের পাশাপাশি সব জেলার জেলাশাসক, পুলিশ কমিশনার ও সব জেলার পুলিশ সুপারদের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন কলকাতা পুলিশের কমিশনারও। বৈঠকে হাসপাতাল কর্মীদের প্রশিক্ষণ, নির্দিষ্ট পোশাক, ডিউটি রস্টারের দিকে জোর দেওয়ার কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
পাশাপাশি কর্মী নিয়োগের আগে তাঁদের অতীত কাজের রেকর্ড খুঁটিয়ে দেখার কথাও বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। স্বাস্থ্য দফতর তাঁরই নিয়ন্ত্রণাধীন। সেক্ষেত্রে হাসপাতালে কোনো অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটলে তার দায় সরাসরি তাঁর উপর বর্তায় বলে তিনি মনে করেন। এই সব ঘটনার পিছনে কোনো চক্রান্ত লুকিয়ে থাকতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন মমতা।
কি কি নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর?
হাসপাতাল চত্বরের ভিতরে-বাইরে নজরদারি বাড়াতে হবে বলে নির্দেশ দেওয়া হয়। হাসপাতাল ক্যাম্পাসের সামগ্রিক নিরাপত্তা জোরদার করতে পদক্ষেপ। চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী ও রোগীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য নিতে হবে বিশেষ ব্যবস্থা। হাসপাতালে পরিচয়পত্র বাধ্যতামূলক করতে হবে, বিশেষ করে চিকিৎসক ছাড়া অন্য কর্মীদের ক্ষেত্রেও
বেসরকারি নিরাপত্তারক্ষী নিয়োগের ক্ষেত্রে থাকবে কঠোর তদারকি, নির্দিষ্ট পোশাক, পরিচয়পত্র ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা। রোগীদের বিশেষ সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। হাসপাতালগুলিতে পর্যাপ্ত আলো, সিসিটিভি বাধ্যতামূলক। কোনও সিসিটিভি খারাপ হলে তা তৎক্ষণাৎ বদল করতে হবে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি এসএসকেএম হাসপাতালে এক নাবালিকার শ্লীলতাহানির অভিযোগ সামনে আসে। ইতিমধ্যেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অ্যাকশন টেকেন রিপোর্ট জমা দিয়েছেন। এই বিষয়ে এদিন মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন, কীভাবে এক হাসপাতালের অস্থায়ী কর্মী অন্য হাসপাতালে প্রবেশ করল? সবমিলিয়ে এদিন রোগী, চিকিৎসক- স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষায় একাধিক কড়া নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এবার তা কতটা ফলপ্রসূ হয় তা বলবে সময়।


Comment here