চলে গেলেন কালজয়ী সঙ্গীতশিল্পী কিশোর কুমারের প্রথম স্ত্রী অভিনেত্রী রুমা গুহ ঠাকুরতা ১৯৩৪ সালের ২১শে নভেম্বর কলকাতাতেই এক সাঙ্গীতিক পরিবারে জন্মেছিলেন রুমা গুহ ঠাকুরতা।মা স্বাতী দেবী ও বাবা সত্যেন ঘোষের কন্যা রুমার বেড়ে ওঠাও কলকাতাতেই ।বিভিন্ন কর্মজীবনের মাঝেই ১৯৫১ সালে বিশিষ্ট গায়ক-সুরকার, অভিনেতা কিশোর কুমারের সঙ্গে বিবাহসূত্রে আবদ্ধ হন।১৯৫৮ সালে বিচ্ছেদ হয়ে যায় তাঁদের।কিশোর কুমার ও স্ত্রী রুমার সন্তান অমিত কুমার।কিশোরের সঙ্গে বিচ্ছেদের পর রুমার সঙ্গে বিয়ে হয় অরূপ গুহ ঠাকুরতার। ১৯৬০ সালে অরূপ বাবুকে বিয়ে করেন রুমা। গায়িকা শ্রমণা চক্রবর্তী, অয়ন গুহ ঠাকুরতা রুমা এবং অরূপবাবুর সন্তান।কলকাতার গানের কথা ভাবতেই যার নামটি প্রথমেই মনে পড়ে তিনি গায়িকা, অভিনেত্রী রুমা গুহ ঠাকুরতা। কলকাতা শহরের গানের সঙ্গে নাড়ির যোগে জড়িয়েছিলেন রুমা গুহ ঠাকুরতা ও তাঁর ‘ক্যালকাটা ইয়ুথ কয়্যার’। নানান গান বেঁধেই এক শহুরে বাউল দল হয়ে উঠেছিল ‘ক্যালকাটা ইয়ুথ কয়্যার’, যার অগ্রণী ভূমিকায় ছিলেন রুমা গুহঠাকুরতা স্বয়ং। ১৯৫৮ সালে প্রতিষ্ঠা হয় ‘ক্যালকাটা ইয়ুথ কয়্যারের’।সোমবার ভোর সওয়া ৬টা নাগাদ ৩৮ বালিগঞ্জ প্লেসে নিজের বাড়িতেই মৃত্যু হয়েছে বর্ষীয়াণ অভিনেত্রীর। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর।কিছু দিন আগেই ছেলে অমিত কুমারের বাড়িতে গিয়েছিলেন। মাস তিনেক অমিতের বাড়িতেই ছিলেন। কয়েক দিন আগেই কলকাতায় ফেরেন রুমা। বিকেলে ছেলে অমিত এলেই শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে এই অভিনেত্রী-গায়িকার। গানের সঙ্গে সঙ্গে রুমা বাংলা চলচ্চিত্র জগতেও নিজগুণে স্মরণীয় করেছেন। তাঁর অভিনয় জীবন শুরু হয়েছিল মুম্বাইতে। পরিচালক অমিয় চক্রবর্তীর ‘জোয়ার ভাঁটা’ (১৯৪৪) দিয়ে হিন্দি সিনেমায় আত্মপ্রকাশ হলেও, আপামর সিনেমা প্রেমীরা তাঁকে মনে রেখেছেন বাংলা ছবি ‘পার্সোনাল অ্যাসিস্টেন্ট’ (১৯৫৯) ছবির ‘রুমালি সেন’ হিসাবে। এরপর তিনি পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের ‘অভিযান’, তপন সিনহার ‘নির্জন সৈকত’, তরুণ মজুমদারের ‘পলাতক’, ‘বালিকা বধূ’, ‘দাদার কীর্তি’ সহ তপন সিনহার ‘হুইল চেয়ার’, অসিত সেনের ‘বৈরাগ’, বিজয় বোসের ‘বাঘিনী’ সহ বহু ছবিতে তিনি অভিনয় করেছেন। ১৯৫৮ সালের ‘লুকোচুরি’, ‘পলাতক’, ‘তিন কন্যা’, ‘অ্যান্টনি ফিরিঙ্গি’, ‘বাঘিনী’, ‘অমৃতকুম্ভের সন্ধানে’ সহ বহু ছবিতে গান গেয়ে সুনাম অর্জন করেছেন।
Comment here