Uncategorized

করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় জোরালো পদক্ষেপের নির্দেশ-মমতা

প্রতিনিধি, মুক্তিযোদ্ধাঃ- দেশজুড়ে ফের করোনা সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে, আর সেই প্রেক্ষাপটে সোমবার ৯ই জুন নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির নেতৃত্বে এক জরুরি প্রস্তুতি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব, স্বাস্থ্যসচিব এবং অন্যান্য প্রশাসনিক কর্তারা। এই বৈঠকে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় রাজ্য সরকারের প্রস্তুতি ও পরিকল্পনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি বৈঠক শেষে রাজ্যবাসীকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেন। তিনি বলেন, “করোনা পরিস্থিতি সম্পর্কে আতঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই। সরকার যেকোনো পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে, আমরা যে কোনও সঙ্কটের মোকাবিলা করতে সক্ষম। তাই ভয় পাওয়ার কিছু নেই, শুধু সতর্ক থাকতে হবে।
মমতার এই বার্তা দেশের অন্যত্র করোনা পরিস্থিতি যেমন উদ্বেগজনক, তেমনি পশ্চিমবঙ্গেও করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে। বিশেষত, গত দুই মাসে দেশে করোনা সংক্রমণ ফের উর্ধ্বমুখী হওয়ায় বিভিন্ন রাজ্যে সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, কোভিড-১৯ এর নতুন ভ্যারিয়েন্ট এবং তার প্রতিক্রিয়া মোকাবিলায় সমস্ত প্রস্তুতি ইতিমধ্যেই নেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, “আমরা সব দিক থেকে প্রস্তুতি নিচ্ছি। পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন,অক্সিজেন সাপ্লাই এবং হাসপাতালের সুযোগ-সুবিধা বজায় রাখা হবে। তবে, জনগণেরও এক্ষেত্রে সঙ্গতিপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে।
মুখ্যমন্ত্রী সরকারের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী, হাসপাতালগুলিতে বিশেষভাবে কোভিড সেবা বাড়ানোর জন্য আরও পর্যাপ্ত কর্মী এবং সুবিধা সংযোজনের কথা বলা হয়েছে। করোনা পরীক্ষার হার বাড়ানোর জন্য নতুন পরিকল্পনা গৃহীত হয়েছে এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বলেন, “মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য আমরা আরও প্রচারণা চালাবো। মাস্ক পরা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, এবং নিয়মিত হাত ধোয়া এই তিনটি মূল বিষয়েই সচেতনতা বাড়ানো হবে।” এছাড়াও, রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে কোভিড পরীক্ষা কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে।
এদিনের বৈঠকে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আলোচনা হয়, তা হল – রাজ্যে স্বাস্থ্যসেবা ক্ষেত্রে ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রমের গতি আরও ত্বরান্বিত করা। ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকার বহু মানুষের জন্য দ্রুত টিকাকরণ নিশ্চিত করেছে এবং এই কর্মসূচি চলতে থাকবে। এই বিষয়ে মমতা ব্যানার্জি বলেন, “টিকাকরণে কোনও প্রকার দেরি হবে না। প্রতিটি মানুষ যাতে ভ্যাকসিন পায়, তার জন্য আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করছি। ভ্যাকসিনেশন আমাদের একমাত্র শক্তি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা আরও জানান, রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি নজরদারিতে রাখা হবে এবং কোনও অঞ্চলে যদি করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ে, তবে সেখানকার স্বাস্থ্য পরিষেবা বাড়ানো হবে,তবে তিনি আবারও বলেন, “সামগ্রিকভাবে জনগণের সাহায্য ছাড়া কোভিডের বিরুদ্ধে যুদ্ধ সম্ভব নয়। সবাইকে মেনে চলতে হবে স্বাস্থ্যবিধি।”
বৈঠক শেষে মুখ্যমন্ত্রী সবাইকে জানান, “আমরা রাজ্যবাসীর পাশে আছি,আতঙ্কিত হবেন না, তবে সতর্ক থাকতে হবে। সরকার সকল সম্ভাব্য সহায়তা করতে প্রস্তত
মুখ্যমন্ত্রীর এই বার্তা রাজ্যবাসীকে স্বস্তি দিয়েছে, তবে এখন দেখতে হবে, করোনা পরিস্থিতির উপর কতটা নিয়ন্ত্রণ রাখা যায় এবং রাজ্যবাসী কতটা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে সক্ষম হয়। সকলের সম্মিলিত প্রয়াসে করোনা প্রতিরোধ করা সম্ভব, এটা বিশ্বাস করে সরকার দৃঢ় পদক্ষেপ নিয়ে কাজ করতে প্রস্তুত।

Comment here