উজ্জ্বল ভট্টাচার্য্য, শিলিগুড়ি, ভারতের উত্তর- পূর্বাঞ্চলের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়ি সংলগ্ন এলাকার তথা উত্তরবঙ্গের ভৌগোলিক অবস্থানের গুরুত্বের কথা ভেবে এবং ভারতের উত্তর- পূর্বাঞ্চলে রেল সংযোগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে আলুয়াবাড়ি রোড এবং নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনের মধ্যে নতুন ৩য় এবং ৪র্থ রেলপথ অনুমোদিত হয়েছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভায় অনুমোদিত হল আলুয়াবাড়ি রোড এবং নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনের ৩য় এবং ৪র্থ রেলপথ । বর্তমানে আলুয়াবাড়ি রোড এবং নিউ জলপাইগুড়ির মধ্যে দুইটি (প্রথম এবং দ্বিতীয়) রেলপথ আছে । কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভায় উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের অধিনে এই প্রকল্পের জন্য অনুমোদন হয়েছে ১৭৮৬ কোটি টাকা। মোট ৫৭ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই প্রকল্পের মধ্যে ৭টি ষ্টেশনের উন্নয়ন সহ ৯৯টি সেতু, ৩টি রোড ওভারব্রীজ এবং ৮টি রোড আন্ডার ব্রীজ তৈরি করা হবে।
এ বিষয়ে এদিন উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কপিঞ্জল কিশোর শর্মা সাংবাদিকদের জানান, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা আলুয়াবাড়ি রোড এবং নিউ জলপাইগুড়ির ষ মধ্যে ৩য় এবং ৪র্থ রেলপথ নির্মাণের অনুমোদন দিয়েছে, যা ভারতের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলে রেল যোগাযোগ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের আওতাধীন ৫৭ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই প্রকল্পটি আনুমানিক ১,৭৮৬ কোটি টাকা ব্যয়ে অনুমোদিত হয়েছে। এই প্রকল্পের লক্ষ্য দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলের পরিবহন অবকাঠামোর ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটানো। অতিরিক্ত রেলপথ চালু করার মাধ্যমে, এটি যানজট কমাবে, যাত্রী ও মালবাহী ট্রেন উভয়েরই আরও দক্ষ এবং দ্রুত চলাচলের সুযোগ করে দেবে, ফলে ভ্রমণের সময় কমবে এবং পরিষেবার সামগ্রিক নির্ভরযোগ্যতা উন্নত হবে। বর্ধিত রেল ক্ষমতা কেবল বিদ্যমান অবকাঠামোর উপর বোঝা কমাবে না বরং চা, কাঠ এবং কৃষি পণ্যের মতো পণ্য পরিবহনকেও সহজতর করবে, যার ফলে স্থানীয় ও আঞ্চলিক অর্থনীতিকে চাঙ্গা করবে।
এই প্রকল্পটি দিল্লি-গুয়াহাটি হাই ডেনসিটি নেটওয়ার্ক রুটের অংশ এবং ভুটান, বাংলাদেশ এবং নেপালের সাথে আন্তর্জাতিক সীমান্তের কাছাকাছি থাকার কারণে কৌশলগত গুরুত্ব বহন করে, যা এই প্রতিবেশী অঞ্চলগুলিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশাধিকার প্রদান করে। এটি বিহার (কিষাণগঞ্জ) এবং পশ্চিমবঙ্গের (জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং এবং উত্তর দিনাজপুর) জেলার মধ্য দিয়ে যায়, যা যাত্রী এবং মাল পরিবহন উভয়ের জন্যই একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ হিসেবে কাজ করে। অবকাঠামোগত উন্নয়নের মধ্যে ৭টি স্টেশন, ৯৯টি সেতু এবং ৩টি রোড ওভার ব্রিজ এবং ৮টি রোড আন্ডার ব্রিজ নির্মাণ অন্তর্ভুক্ত থাকবে। প্রকল্পটির লক্ষ্য হল ২১.৬ মিলিয়ন টন অতিরিক্ত পণ্য পরিবহন সহজতর করা, যার ফলে লজিস্টিক খরচে ২,৫৫১ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে। এটি প্রতি বছর ২.১৪ কোটি লিটার ডিজেল সাশ্রয় করে জ্বালানি সংরক্ষণেও উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে।
বৃহত্তর প্রেক্ষাপটে , আলুয়াবাড়ি রোড – নিউ জলপাইগুড়ি ৩য় এবং ৪র্থ রেলপথ কেবল প্রকল্পটি পরিবহন পরিকাঠামো শক্তিশালী করার জন্যই নয়, বরং উত্তর-পূর্বাঞ্চলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, আঞ্চলিক একীকরণ এবং জীবনযাত্রার মান উন্নত করার জন্য একটি অনুঘটক হিসেবেও কাজ করবে। এই প্রকল্পটি বিহার, পশ্চিমবঙ্গ এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চল জুড়ে পরিবহন নেটওয়ার্কের সামগ্রিক দক্ষতা বৃদ্ধি করবে, এই গুরুত্বপূর্ণ করিডোরের যানজট কমাবে যা ভারতের পূর্ব এবং উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশদ্বার হিসেবে কাজ করে। উত্তর – পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ে (এন এফ আর)- এই প্রকল্পটি দক্ষতার সাথে বাস্তবায়নের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যা এই অঞ্চলের সংযোগ এবং উন্নয়নের সর্বাধিক সুবিধা নিশ্চিত করবে।
ভারতীয় রেলওয়ে এবং উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ে সুত্রে এ বিষয়ে আরও জানা গেছে যে, ৩১শে জুলাই, ২০২৫ বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভায় চারটি রেল প্রকল্পের অনুমোদন হয়েছে যার মধ্যে আছে আলুয়াবাড়ি রোড এবং নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনের মধ্যে ৩য় এবং ৪র্থ রেলপথ নির্মাণের অনুমোদন । অনুমোদিত চারটি রেল প্রকল্পের জন্য মোট খরচ হবে প্রায় ১১,১৬৯ কোটি টাকা, তার মধ্যে আলুয়াবাড়ি রোড এবং নিউ জলপাইগুড়ির মধ্যে ৩য় এবং ৪র্থ রেলপথ এর জন্য অনুমোদিত হয়েছে ১৭৮৬ কোটি টাকা। যার কাজ ভারতীয় রেলওয়ে বিভাগের পক্ষ থেকে যত তারাতারি সম্ভব কাজ শুরু করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এই প্রকল্পের কথা শুনে সাধারণ মানুষের অনেকেই খুশি, তাদের মধ্যে অনেকেই বলেন আর্থিক অনুমোদন হয়েছে শুনে খুব ভালো লাগছে তবে এই প্রকল্পের কাজ যাতে তারাতারি শুরু হয় এবং ষ শেষও করা হয় তবেই এই অঞ্চলের সাধারণ মানুষ সহ প্রায় সকলেই উপকৃত হবে।
Comment here